সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার – সর্বোত্তম ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া, ফজিলত, আরবি, উচ্চারণ ও অর্থ

আরো পড়ুনঃ ঘুমের আগে চার ‘কুল’ ও আয়াতুন কুরসি পড়ার ফজিলত

মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনে কিছু ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কথা, কাজ ও ইবাদত-বন্দেগি করতে গিয়ে ভুল-ত্রুটি ও আল্লাহর অবাধ্যতা করে বসে এবং পরবর্তীতে সে আবার অনুতপ্ত হয়। ফলে সে মহান আল্লাহর দরবারে তওবার মাধ্যমে পাপ থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করে।

বান্দা হিসেবে আল্লাহ তা'আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ছাড়া কোনও উপায়ও নেই মানুষের। মহা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তার গুনাহসমূহ নেকিতে পরিবর্তন করে দেবেন।’ -(সুরা, ফুরকান, আয়াত, ৭০)

মহান আল্লাহ তা'য়ালার কাছে আমাদের বেশিবেশি করে ক্ষমা এবং তওবা করতে হবে। এতে দুনিয়ার যেমন কল্যাণ হবে, তেমনি পরকালের সফলতা লাভ হবে। মহা নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার যতগুলো পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন, তার একটি হলো- সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করা।

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো, সাইয়্যিদুল ইস্তিগফারের ফজিলত, আরবী আয়াত, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ, পড়ার নিয়ম এবং এর ঘটানা ও ইতিহাস সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই- 

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার - ইসলাম ধর্মের সর্বোত্তম ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া, ফজিলত ও অর্থ

শাদ্দাদ বিন আওস (রা.) নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে এবং সেদিন যদি সে সন্ধ্যার আগে মারা যায়, তাহলে সে ব্যক্তি জান্নাতের অধিবাসী হবে। 

আর যে ব্যক্তি রাতের বেলায় এ বাক্যগুলো (সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার) পাঠ করবে  এবং সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তাহলে সে ব্যক্তি জান্নাতের অধিবাসী হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩০৬)

ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনার জন্য পবিত্র কুরআন মাজিদে ও হাদিস শরিফে অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠ দোয়াটিকে বলা হয় সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার অর্থাৎ প্রধান তথা সেরা বা শ্রেষ্ঠ ক্ষমার আবেদন।

রাসূলে পাক (সা.) বলেন, ‘যদি কেউ সকাল-সন্ধ্যায় পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার পাঠ করে, সে যদি ওই দিন রাত্রে বা দিনে ইন্তেকাল করে, তাহলে সে হবে জান্নাতি।’

কোন বান্দা যখন মহান আল্লাহর দ্বারস্থ হয়, তখন তিনি ক্ষমা ও দয়ার কুদরতি হাত দুটো প্রসারিত করেন। বান্দা ইস্তিগফার করলে আল্লাহ পাক আজাব দেন না। 

পবিত্র কুরআনের বর্ণনা, ‘আপনি তাদের মাঝে থাকা অবস্থায় আল্লাহ পাক তাদের শাস্তি দেবেন না এবং তারা ক্ষমা প্রার্থনা করলে তখনো আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না।’ (সূরা-৮ আনফাল, আয়াত- ৩৩)।

রাসূলে পাক (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দোয়া (সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার) পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতি হবে’।

সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার কী?

ইস্তেগফার শব্দের বাংলা অর্থ ক্ষমা চাওয়া, আর তাওবা করা হলো আল্লাহর পথে ফিরে আসা। ২টি শব্দের অর্থ প্রায় কাছাকাছি। 

ইস্তেগফারের ফজিলত ও ইস্তেগফার সম্পর্কে আল্লাহ তা;আলাত নির্দেশ

** ইস্তিগফার সম্বন্ধে পবিত্র কোরআনে আছে, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি মহাক্ষমাশীল।’(সুরা-৭১ নূহ, আয়াত- ১০)।

** ‘অতঃপর তোমার তোমাদের রবের প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।’(সুরা-১১০ নাসর, আয়াত- ৩)।

** ‘আর পরম করুনাময় আল্লাহ তা'আলা আজাব দেবেন না তাদের, আপনি তাদের মাঝে থাকা অবস্থায়; আর আল্লাহ তাদের আজাব দেবেন না, যখন তারা ইস্তিগফার করে।’(সুরা-৮ আনফাল, আয়াত- ৩৩)।

তওবা-

তওবা অর্থ হলো ফিরে আসা। মানুষ যখন ভুল পথে যায় বা বিপথগামী হয়, তখন সেখান থেকে পুনরায় সঠিক পথে বা ভালো পথে ফিরে আসাকে তওবা বলা হয়।

** তওবার পারিভাষিক অর্থ হলো লজ্জিত হওয়া। অর্থাৎ স্বীয় কৃতকর্মে লজ্জিত হয়ে সঠিক (আল্লাহর) পথে ফিরে আসা। তওবার জন্য করণীয় হলো, স্বীয় কৃতকর্মের প্রতি লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া, সেই অপরাধ আর না করার দৃঢ় প্রত্যয় ও সংকল্প গ্রহণ করা এবং নেক আমলের প্রতি বেশিমাত্রায় মনোযোগী হওয়া।

** তওবা সম্পর্কে কোরআনে রয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করো, আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে ঝরনাসমূহ প্রবহমান।’ (সুরা-৬৬ তাহরিম, আয়াত- ৮)।

** নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা'আলা তওবাকারীদের ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত- ২২২)।

** রাসুলে পাক (সা.) বলেন, ‘হে মানব সকল! তোমরা তোমাদের রবের (আল্লাহর) দিকে ফিরে আসো, নিশ্চয় আমি প্রতিদিন ১০০ বার তওবা করি।’ (মুসলিম)

আরো পড়ুনঃ সুন্নাহ অনুযায়ী দৈনন্দিন রুটিন – সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নবীর (সা.) জীবনধারা

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার আরবি

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنوبَ إِلاَّ أَنْتَ 

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার বাংলা উচ্চারণ

আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানি ওয়া আনা ‘আব্দুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্বা‘তু। আ‘উযু বিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী। ফাগফির লি, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা।

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আপনি আমার রব্ব, আপনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আমি আমার সাধ্য মতো আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির ওপর রয়েছি। 

আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আপনি আমাকে যে নেয়ামত দিয়েছেন আমি তা স্বীকার করছি এবং আমার অপরাধও স্বীকার করছি। অতএব, আপনি আমাকে মাফ করে দিন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া পাপরাশি ক্ষমা করার কেউ নেই।

সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার, ঘটনা ও ইতিহাস

মানুষ প্রতিদিন জেনে না বা জেনে অসংখ্য গুনাহের কাজ করে ফেলে, অনেক গুনাহ করতেছে জানার পরও গুনাহ করে ফেলে, আবার কেউ না জানার ফলে বিভিন্ন গুনাহ করে হতাশায় ভোগে। হাশরের ময়দানে আমাদের প্রত্যেককেই এজন্যে আল্লাহর জবাবদিহি করতে হবে।

আর আল্লাহ তা'আলা হচ্ছেন দয়ার সাগর, তাই এমন কিছু দোয়া আছে যেগুলো পড়ে আল্লাহর নিকট আমরা দোয়া করতে পারি, যেনো আল্লাহ তা'আলা আমাদের শেষ বিচারের দিন মাফ করে দেন। সে সকল দোয়ার মধ্যেই একটি দোয়া হল "সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার"।

তাছাড়া, সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার বা সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারকে বলা হয় ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দোয়া। এই দোয়ার যেমন রয়েছে অনেক ফযীলত, তেমনি এর রয়েছে ঘটানা ও ইতিহাস। চলুন আমরা জেনে নেই সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারের ঘটনা ও ইতিহাস সম্পর্কে-

হাসান বসরী রাহঃ এর কাছে একবার কোন এক ব্যক্তি জানালো “ তার ফসলে খরা লেগেছে, তাকে যেনো এমন কোন আমল দিন” তখন হাসান বসরী রাহঃ তাকে বললেন নিয়মিত এস্তেগফার করো। 

কিছুক্ষণ পরেই অন্য আরো একজন ব্যক্তি এসে অভিযোগ পেশ করল “আমি খুবই গরীব মানুষ। আমাকে কিছু রিজকের জন্য কোন আমল দিন” হাসান বসরী রাহঃ তাকেও বলেলন নিয়মিত এস্তেগফার করো।

এমনিভাবে অপর আরো এক ব্যক্তি এসে সন্তান হওয়ার জন্য আমল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তাকেও বললেন, নিয়মিত এস্তেগফার করো।” 

তখন সেখানে উপস্থিত উপস্থিত ছাত্ররা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “ হুজুর সবাইকে একই পরামর্শই দিলেন যে?” তখন বিখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরী রাহঃ বললেন “আমি নিজের পক্ষ থেকে কিছুই বলি নি। 

বরং এটি মহান আল্লাহ তা'আলা তার মহা পবিত্র কুরআনে শিখিয়েছে। অতপর তিনি সুরা নুহ এর এই আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন। (তাফসীরে কুরতুবী ১৮/৩০৩) নুহ আঃ বললেন “তোমরা তোমাদের রবের কাছে নিয়মিত এস্তেগফার করো ( ক্ষমা চাও), নিশ্চয় তিনি অনেক ক্ষমাশীল। 

তিনি তোমাদের উপরে অজস্র বারিধারা ও রহমত বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততি বৃদ্ধির মাধ্যমে তোমাদের সাহায্য করবেন। তোমাদের জন্যে উদ্যান তৈরি করবেন, তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।” (সুরা নূহ- ১০-১২)

যারা অনেক পেরেশানি মধ্যে আছেন, হতাশার মধ্যে আছেন, দুঃখ, একাকীত্ব, ডিপ্রেশন ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আছেন, তারা নিয়মিত এস্তেগফারকে ‘লাযেম’ করে নিন। 

লাযেম হচ্ছে, দিনে রাতে যথাসম্ভব এস্তেগফার করা বা নিজের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বানিয়ে নেওয়া। উঠতে বসতে যে কোন সময় এস্তেগফার করতে থাকুন। আল্লাহ তায়ালা সকল পেরেশানি ও মানসিক কষ্ট দূর করে দিবেন ইনশাল্লাহ!

সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়ার নিয়ম

সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়ার নিয়ম বা কিভাবে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়বেন। যেহেতু সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার একটি দোয়া, তাই আপনি যখন ইচ্ছা বিশেষ করে, ফরজ নামাজের শেষে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়তে পারবেন। তাছাড়া সাধারণত এই দোয়া পড়া হয়-

  • সকালের ফজরের নামাজের শেষে।
  • বিকালে আসরের নামাজের শেষে।
  • এছাড়াও, দিন রাত যখন খুশি এই দোয়া পড়তে পারবেন।

সাইয়েদুল ইস্তেগফারের ফযীলত

হযরত শাদ্দাদ ইবনে আওস (রা:) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দোয়া পাঠ করবে, সে ব্যক্তি দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’। এছাড়াও- 

  • হতাশা, মানসিক কষ্ট, মন খারাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এই দোয়ার ফলে।
  • যাদের অভাব অনটন লেগেই আছে তারা বেশি বেশি এই দোয়াটি পাঠ করবেন।
  • যাদের বিয়ে হচ্ছে না বা যাদের সন্তান হচ্ছে না, তারা এই দোয়া বেশিবেশি পড়তে পারেন।

শেষকথা- গুনাহ মাফের সর্বত্তোম দোয়া

সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার হলো আমাদের ইসলাম ধর্ম মতে আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চাওয়ার সর্বত্তোম পদ্ধতি। তাছাড়া, এটি শুধুমাত্র একটি দোয়া নয়, বরং মহান আল্লাহর প্রতি বান্দার পরম দাসত্ব, আনুগত্য এবং আত্মসমর্পণের নিদর্শন।

আরো পড়ুনঃ ইসলামে সফলতার ৫টি মূলমন্ত্র – দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হওয়ার পথ

এই দোয়াটি প্রতিদিন নিয়মিত একজন মুমিন মহান আল্লাহর অসীম রহমত এবং মাগফিরাত লাভ করত পারে। পরম করুনাময় আল্লাহ তা'আলা যেন আমাদের সকল মুসলিম বান্দাদের নিয়মিত সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url