মেয়েদের বাঁধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

আসসালামু আলাইকুম,প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে। মেয়েদের জরায়ুর কিছু সমস্যা থাকে যা জন্মগত হতে পারে আবার অসুখের কারণেও হতে পারে যার কারণে বাধক রোগের সমস্যা দেখা দেয়। মেয়েদের জন্মগত সমস্যার কারণে জরায়ু ব্লক হয়ে থাকে আবার ডিম আসছে না তার টিউব ব্লক যেটা বাচ্চাদের মত।

মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসাও প্রতিকার
মেয়েদের বাধক রোগ হতে পারে আরো কিছু অসুখের কারণে যেমন অভারিয়ান চকলেট সিস্ট এন্ড্রোমেট্রিয়সিসের কারণেও হতে পারে আবার হরমোনেও কারণেও হতে পারে কারো কারো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে সন্তান ধারণের চেষ্টা করার পর টানা এক বছর সময়কাল যদি কেউ সফল না হন তাহলে তাকে ইনফাটাইল বা সন্তান ধরনের অক্ষম হিসেবে গণ্য করা হয়।

সূচিপত্রঃ মেয়েদের বাধক রূপ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

ভূমিকাঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজ আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব বাধক রোগ কেন হয় এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে। মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় এটা জানা সকলেরই দরকার। প্রতিটা মহিলার এই মাসিকের আগে অথবা মাসিক চক্রের সময় এই ব্যথা অনুভব করতে পারে কিছু নারীদের জন্য এটি অসহনিও হয়ে ওঠে। সে সময় মহিলাদের দৈনন্দিন কাজ করতে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় সেজন্য আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে চলুন জেনে নেই এর প্রতিকারগুলো।

বাধক রোগ কিঃ

আমরা সকলেই জানি বাধক হলো মাসিকের সময় ব্যথা। আপনি ধরে নিতে পারেন এর অর্থ একটি কঠিন মাসিক প্রভাব ব্যথার তীব্রতা এবং কারণ অনুসারে এটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেমনঃ
প্রাথমিক বাধকঃ
মহিলাদের মধ্যে ৫০% মহিলার সবচেয়ে সাধারণ ধরনের ব্যাথা দেখা যায়। এ সমস্যাটি কোন  স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত রোগ নির্দেশ করে না। প্রতিটা মহিলার এই মাসিকের এক বা দুই দিন আগে তলপেটে সামান্য ব্যথা দেখা দেয় আবার কারো কারো রক্তপাত শুরু হওয়ার সাথে সাথে ব্যথা শুরু হতে পারে। কিছু মহিলাদের এই ব্যথা দুই থেকে তিন দিনের হয়ে থাকে। আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ব্যথা ১২ থেকে ৭২ ঘন্টা স্থায়ী হয়। মহিলাদের বাচ্চা হওয়ার পর মাসিকের ব্যথাটা আর থাকে না।
সেকেন্ডারি বাধকঃ 
এটি একটি স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত রোগ অথবা সংক্রমণের কারণেও ঘটে থাকে। এটি সাধারন মাসিকের  আগে শুরু হয় এবং প্রাকৃতিক নিয়মেই আবার বন্ধ হয়ে যায়। সেকেন্ডারি বাধক সাধারণত প্রাথমিকের তুলনায় কিছুটা বেশি গুরুত্ব হয় এবং ওষুধের মাধ্যমে এটি যদি না কমে তবে অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে এটি নিরাময় করতে হয়।

বাধক রোগ কেন হয়ঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা বাদক রোগ বন্ধুত্ব নারী ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে যদিও বাংলাদেশে নারীদের এজন্যই নিগ্রহের শিকার হতে হয় বেশি। জরায়ু অথবা গরিব বা মধ্যে আবদ্ধা জনিত কারণে এইরুপ হতে পারে। সাধারণত জরায়ুর মধ্যে রক্ত ধীরে ধীরে নিঃসৃত হওয়ার মাধ্যমে জমাট বাঁধে এবং ফাইব্রোসিন প্রতিক্রিয়ায় তাহা পুনরায় দূরবীভূত হয় এবং স্রাব সহ নির্মিত হয় যার কারণে বাধক রোগ দেখা দেয়।

বাধক রোগের কারণঃ

মেয়েদের বাধক রোগ হয় প্রস্টাগ গ্লান্ডিন নামক হরমোন নিঃসরণের কারণে জরায়কের সংকুচিত করে। ঋতুস্রাব জুড়ে জরায়ু সংকুচিত হয় আবার কখনো কখনো জরায়ু আরও দৃঢ়ভাবে সংকুচিত হয় যার ফলে বেশি টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহকে প্রভাবিত করতে পারে।যোনি শুষ্কতার সমস্যার কারণে ও পেটে ব্যথা হতে পারে আপনার।
বাধক রোগের অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে-
  • ১১ বছর বয়সে পৌঁছানোর আগেই বয়সন্ধি।
  • ধূমপান করা।
  • মাসিকের পারিবারিক ইতিহাস।
  • বাধক রোগের লক্ষণঃ
  • পাঠক বন্ধুরা, বাধক রোগের লক্ষণগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-
  • তলপেটে তীব্র ব্যথা করে।
  • পিঠের নিচে উড়ু এবং নিতম্বের ব্যথা করে।
  • মাথা ব্যথা এবং বমি বমি ভাব হয়।
  • খাবারের প্রতি অরুচি চলে আসে।
  • দুর্বলতা এবং কারো কারো মাথা ঘোরে।
  • পেটের ভিতর চাপ অনুভূত হয়।
মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

বাধক রোগ নির্ণয়ঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধু, আপনি যদি প্রতিমাসে নিয়মিত তীব্র ব্যথা অনুভব করে থাকেন তবে অবশ্যই আপনি একজন গাইনোকলজিস্ট এর সাথে পরামর্শ করে তারপরে ওষুধ শ্রবণ করুন। যদি দেখেন নিম্নে উল্লেখিত লক্ষণ গুলি আপনি নির্ণয় করতে পারছেন তবে বুঝে নেবেন আপনি মাদক রোগে ভুগছেন।
  • আপনার যদি পঁচিশ বছর পার হয়ে যায় তাও যদি তীব্র ব্যথা করে।
  • বমি লাভ হয় এবং ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
  • যোনি স্রাবের গন্ধ গঠন এবং রঙের পরিবর্তন দেখা যায়।
  • আবার অনেক সময় দেখা যায় আপনার পিরিয়ড শুরুই হয়নি কিন্তু আপনার প্রচন্ড পেটে ব্যথা।

বাধক রোগের চিকিৎসাঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা,আপনি যদি উপরে উল্লেখিত কোন একটি সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে অবশ্যই দেরি না করে আপনি একজন চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন এবং চিকিৎসকটি অবশ্যই গাইনোকলজি চিকিৎসক হতে হবে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এবং চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসক আপনাকে আপনার চিকিৎসার ইতিহাস সম্পর্কে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন। 
এতে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই, চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় করার জন্য সংক্রমনের লক্ষণ গুলি নির্ধারণ করতে শারীরিক এবং শ্রেণী পরীক্ষা করতে পারেন। আবার আপনার পেটের পরীক্ষাও করাতে পারেন।

বাধক রোগের প্রতিকারঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনি যদি একটু সচেতন হন তবে অবশ্যই বাধক রোগের প্রতিকার করতে পারবেন। চলুন নিম্নে জেনে নেই বাধক রোগের প্রতিকারগুলো-
  • খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখতে হবে।
  • নিয়মিত ভাবে ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ব্যায়াম করতে হবে প্রতিদিন।
  • ঘরে রান্না খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে আপনাকে।
  • আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • আপনার জীবন যাপনের পরিবর্তন করতে হবে।
  • রাত জেগে থাকার অভ্যাস বদলাতে হবে এবং দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে এছাড়াও দিন ও রাত মিলে মোট আট ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে আপনাকে।
  • নির্ধারিত বয়সের মধ্যে আপনাকে বাচ্চা নিতে হবে।

বাধক রোগের ঘরোয়া চিকিৎসাঃ

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা,, আমি আপনাদেরকে বাধক রোগের জন্য কয়েকটি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন। এবং কয়েকটি ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি অনেকটাই আরাম পাবেন বাধক রোগ থেকে।
  • আপনি নিয়মিত ভাবে গরম পানিতে গোসল করুন।
  • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন।
  • ধূমপানের অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
  • আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর জাতীয় খাবার রাখুন।
  • যোগ ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • যেসব খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে সেই খাবারগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন এবং মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন।
  • প্রত্যাশিত পিরিয়ডের তারিখের আগে আইবুপ্রোফেন এর মতো প্রদাহ বিরোধী ঔষধ শ্রবণ করে দেখুন।
  • পিছন দিকে এবং তলপেটে মাসাজ করুন। 
  • অ্যালকোহল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • উচ্চ ক্যাফেইন যুক্ত খাবার গ্রহণ সীমিত করতে হবে আপনাকে বাধক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।
  • পেটে বা পিঠের নিচের অংশে হেডিং প্যাড বা গরম বোতলের আপনি অনেকটাই আরাম পাবেন।

বাধক রোগের জটিলতাঃ

সাধারণত মাসিক চিকিৎসার জটিলতা সৃষ্টি করে না এটি আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারে। গুরুতর মাসিক থাকা অবস্থার কারণে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে আপনার। আপনার পিরিয়ড শুরু হওয়ার দিন থেকে পিরিয়ড শেষ হওয়ার দিন পর্যন্ত আপনার দৈনন্দিন রুটিনের যত কাজ আছে সেগুলো নিয়মিতভাবে করার চেষ্টা করুন।
এবং এই দিনগুলোতে আপনি তীব্র ব্যথা সহ্য করতে না পারলে আপনি অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন এবং সেই চিকিৎসকটি অবশ্যই হতে হবে একজন গাইনোকলজিস্ট।
মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

শেষ কথাঃ মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন মেয়েদের বাধক রোগ কেন হয় - এর কারণ লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে। আপনি যদি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তবে নিশ্চয়ই আপনি বাঁধক রোগ সম্পর্কে জেনেছেন। আমাদের আজকের পোস্ট আমরা এখানেই শেষ করব তবে শেষ করার আগে কয়েকটি কথা বলে যেতে চাই।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে অবশ্যই আমি আবার আপনাদের সামনে। পরের পোস্ট নিয়ে আসার আগ পর্যন্ত সবাই সুস্থ সুন্দর ও ভালো থাকুন এবং নিজের প্রতি যত্নবান হন এবং সাবধানে থাকুন। আমাদের আজকের এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন। 
এবং আমাদের পোষ্টের মাঝে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনার মহামূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন। যাতে করে আমরা সেই ভুলগুলো সংশোধন করতে পারি। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি যারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন তাদেরকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।   

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url