হার্ট অ্যাটাকের ২০ টি লক্ষণ কারণ চিকিৎসা প্রতিকার
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আমাদের আর্টিকেলে আজকে আপনাদের জানাবো হার্ট অ্যাটাকের ২০ টি লক্ষণ কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে। হার্ট অ্যাটাক হলে মানুষ আগে থেকে অসুস্থ হয় না বরং আপাত দৃষ্টিতে সুস্থ মানুষেরও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আপনি যদি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো না জেনে থাকেন তবে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হয় এবং বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে রোগীর সাথে।
সূচিপত্রঃ হার্ট অ্যাটাকের ২০ টি লক্ষণ কারণ চিকিৎসা ও প্রতিকার
- ভূমিকা
- হার্ট অ্যাটাক কি
- হার্ট অ্যাটাক কেন হয়
- হার্ট অ্যাটাক কাদের হয়
- হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
- হার্ট অ্যাটাকের কারণ
- হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা
- হার্ট অ্যাটাকের প্রতিকার
- শেষ কথা
ভূমিকাঃ
হৃদপেশি দ্বারা নির্মিত ত্রিকোণাকার ফাঁপা প্রকোষ্ঠ যুক্ত পাম্পের মত যন্ত্রবিশেষ, যার প্রসারণের মাধ্যমে মানবদেহের সর্বত্র রক্তসহবহিত হয় তাকে হার্ট বলে। একজন সুস্থ মানুষের জীবদ্দশায় হৃদপিণ্ড গড়ে দেড় লক্ষ টন রক্ত পাম্প করে বের করে দেয়। মানুষের হৃদপিণ্ড বক্ষ গহ্বরের মধ্যচ্ছাদার উপরে ও দুই ফুসফুসের মাঝ বরাবর বাম দিকে একটু বেশি বাঁকা হয়ে অবস্থিত এটি দেখতে অনেকটা ত্রিকোনার ও লালচে রঙের গুড়াটি চওড়া শুরু হয়ে বাম দিকের পঞ্চম পাঁজরের ফাকে অবস্থান করে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে হার্টের ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম হয় আর প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার ক্ষেত্রে হার্টের ওজন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম হয়ে থাকে।
হার্ট অ্যাটাক কিঃ
হার্ট অ্যাটাক বাড়িত যন্ত্র রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় পাম্প হিসেবে কাজ করে। আপনার সারা শরীরে রক্ত সরবরাহ করে বাসকুলার অর্গান বা পেশি বহুল অঙ্গ সচল রাখে হার্ট। হার্ট নিজেও একটি মাসকুলার অর্গান। দ্বীপ যন্ত্রের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য হার্ট অক্সিজেনযুক্ত রক্ত নেই করোনারি ধমনীর মাধ্যমে। করোনারি তিনটি লেফট করোনারি আটারি রাইট করোনারি আটারি ও লেফট এন্ড ইওর ডিজেন্টিং আটারী।
এই তিনটি আটারির বা ধমনীর মধ্যে কোন কারণে যদি কিছু অংশ বা পুরোপুরি ব্লক হয় তাহলে হার্টের সমস্যা দেখা দেবে। অংশ শত ব্লক হলে তাকে এনজাইনা পেট্রোরিস বলা হয়। আর যদি সম্পূর্ণ ব্লক হয়ে যায় তবে তাকে হার্ট অ্যাটাক বলে।
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়ঃ
হার্টের চারটি প্রকোষ্ঠ রয়েছে সারা শরীরে। এবং এই প্রকোষ্ঠগুলো সারা শরীর থেকে ডি অক্সিজেনযুক্ত রক্ত প্রথমে হৃদপিণ্ডের রাইট এন্টিয়াম বা ডান অলিন্দে প্রবাহিত হয় সেখান থেকে রাইট ভেন্টি কল বা ডান নিলয়ে যায় এরপর পালমেনরি ধমনীর মাধ্যমে ফুসফুসে পাঠানো হয় অক্সিজেনের জন্য। এরপর অক্সিজেনযুক্ত রক্ত হাটে ফিরে আসে লেফট এন্টিয়াম বা বাম অলিন্দের প্রবেশ করে।
লেফট কল বা বাম নিলয়ে যায় এরপর রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় পাপ হিসেবে কাজ করে সারা শরীরে রক্ত সরবরাহের মাধ্যমে শরীর সচল রাখে। এই কার্যক্রমের মধ্যে যদি কোন একটি কাজ না করে অথবা কোন কারনে ব্লক হয়ে যায় তখন হার্ট অ্যাটাক হয়।
হার্ট অ্যাটাক কাদের হয়ঃ
নানা কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক হার্ট অ্যাটাক কাদের হয় সে সম্পর্কে আমাদের আর্টিকেলের আজকের এই পর্ব-
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা ধূমপান করলে।
- অতিরিক্ত ওজন বাড়লে।
- পরিশ্রম ব্যায়াম বা হাটাহাটি না করলে অথবা শুয়ে বসে থাকলে।
- মানসিক চাপ উদ্বেগ বয়স অনন্ত্রিত জীবন যাপন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণেও হতে পারে হার্ট অ্যাটাক।
- শরীরের ওজন কম কিন্তু রক্তে কোলেস্টেরলের বা অতিরিক্ত চর্বি বেড়ে গেলেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
- অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণঃ
হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষণ গুলি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পৃথক হয়ে থাকে। নানা কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। নিম্নের লক্ষণ গুলো যদি রোগীর মধ্যে দেখতে পান তবে বুঝে নিবেন রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। -চলুন নিম্নে জেনে নেই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো কি কি-
- বুকের মাঝখানে অস্বস্তিকর চাপ বুক। বুক চেপে ধরার অনুভূতি কয়েক মিনিটের জন্য স্থায়ী হয় বা যাওয়ার এবং ফিরে আসার ধরনের বোঝা যায়।
- বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি হওয়া।
- বুকে থেকে চোয়াল ঘাড় বাহু কাঁধ বা পিঠে ছড়িয়ে পড়া।
- দুর্বল এবং হালকা মাথা ব্যথা বা মাথা ঘোরা বোধ করা।
- শ্বাসকষ্ট হওয়া।
- ঘাম এবং বমি বমি ভাব হবে রোগীর।
হার্ট অ্যাটাকের কারণঃ
রক্তনালি গুলির একটি গ্রুপ যাকে কোরোনারী ধমনী বলা হয়।হৃদপিন্ডের রক্ত এবং অক্সিজেনের উদার সরবরাহ করে।এই রক্তনালীতে যেকোনো চর্বি জমা এবং রক্ত জমাট বাধা হাটের রক্ত প্রবাহকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ব্লক করতে পারে যার ফলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসাঃ
পাঠক বন্ধুরা, একজন রোগী যখন হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তখন রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে এবং ব্যথা ও উদ্যোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ওষুধ দেওয়া হয় রোগীকে। অনেক সময় দেখা যায় হৃদপিন্ডের সঠিক রক্ত প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে অস্ত্রপাচারের প্রয়োজনও হতে পারে।
সর্বদা মনে রাখবেন হার্ট এটাক একটি জরুরি অবস্থা সময়মতো চিকিৎসা নিলে হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। আপনি যদি উপরের সতর্কতা লক্ষণ গুলির মধ্যে একটি অনুভব করেন তবে অবশ্যই সম্ভবত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। চরনিম্ন জেনে নেই হার্ট অ্যাটাক রোগীর জন্য প্রাথমিক চিকিৎসাগুলো-
হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে অবশ্যই দেরি না করে হসপিটালে নিয়ে যান এবং খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন, আপনি যদি হার্ট অ্যাটাকের রোগী হয়ে থাকেন তবে আপনি কল করতে বা কাউকে ডাকতে সক্ষম না থাকেন তবে আপনার চারপাশের লোকদের থেকে মনোযোগ আকর্ষণ করুন।
একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার হার্ট অ্যাটা ক নির্ণয়ের ভিত্তিতে চিকিৎসা দেবেন রোগীকে। হার্টের রোগীর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিনা তা জানার জন্য নিম্নলিখিত উপায় গুলো ব্যবহার করবেন-
- রক্ত পরীক্ষা করবেন
- একটি ইলেকট্রোগারডিয়াম ইসিজি করবেন।
একটি এনজিওগ্রামঃ সংকীর্ণ বা অবরুদ্ধ করো নারী ধমনী সনাক্ত করার জন্য একটি নিয়মিতভাবে সম্পাদিত পদ্ধতি। স্থানীয় এ্যানাসোসিয়া ব্যবহার করে একটি দীর্ঘ নমনীয় কব্জি বা কুষ্টিয়া অঞ্চলের ধমনীর ভিতরে হৃৎপিণ্ড পর্যন্ত চলে যায়। সংকীর্ণ অবরুদ্ধ এলাকা গুলিকে তারপর একটি বিশেষ রঞ্জক এবং এক্স রেগুলারই একটি সিরিজ দিয়ে চিহ্নিত করা হয় এ পুরো পদ্ধতি এক ঘণ্টারও কম সময় নেয়।
হার্ট অ্যাটাকের প্রতিকারঃ
আপনার কার্ডিওলজ জিস্ট এবং ডায়েটিশিয়ান দ্বারা সুপারিশকৃত জীবনধারা পরিবর্তন গুলি বজায় রাখুন। অন্য হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ন্যূনতম রাখতে আপনার কাজলীষ্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধগুলো চালিয়ে যান। দ্রুত এবং সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে আপনার ডাক্তারের দ্বারা সুপারিশকৃত মেনে চলুম। আপনার অবস্থার উপর নির্ভর করে আপনার ডাক্তার আপনাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক শারীরিক কার্যকলাপ এবং ডায়েটে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url