আমেরিকা ভিসার ধরণ ও খরচ ২০২৫ - গ্রিন কার্ড, B1/B2, F1/M1 ও অন্যান্য ভিসার ফি ও আবেদন প্রক্রিয়া
আরো পড়ুনঃ রোমানিয়া কি কি ভিসা পাওয়া যায় - রোমানিয়া কোন ভিসার খরচ কত
২০২৫ সালে আমেরিকায় ভ্রমণ, পড়াশোনা, চাকরি কিংবা স্থায়ী বসবাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। এই গাইডে থাকছে – আমেরিকার সব জনপ্রিয় ভিসার ধরন, প্রতিটি ভিসার আবেদন ফি, প্রয়োজনীয় শর্ত ও আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য।
তাই, যারা যুক্তরাষ্ট্র ভিসা পেতে ইচ্ছুক তাদের প্রত্যেক আবেদনকারীর জন্য এটি একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড। সে কারণে, এটি মনোযোগের সঙ্গে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আমেরিকা ভিসার ধরণ ও খরচ ২০২৫ - পর্যটক, স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক ও গ্রিন কার্ড
আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও উন্নত দেশগুলোর একটি, যেখানে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা, চিকিৎসা ও পর্যটনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে হলে অবশ্যই সঠিক ভিসা প্রাপ্তি জরুরি এবং আর ভিসার ধরন আপনার উদ্দেশ্যের ওপর নির্ভর করে।
যেমন– পর্যটনের জন্য রয়েছে পর্যটক ভিসা, উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা, কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট বা স্থায়ী বসবাসের জন্য ইমিগ্রান্ট ভিসা ইত্যাদি। আর প্রতিটি ভিসার জন্য আলাদা ফি, শর্ত এবং আবেদন প্রক্রিয়া রয়েছে, যা জানা আবেদনকারির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানব – আমেরিকায় কী কী ধরনের ভিসা পাওয়া যায়, কোন ভিসার খরচ কত এবং আবেদন করার আগে কী প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলে, চলুন জেনে নিই যুক্তরাষ্ট্র ভিসা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একসাথে।
আমেরিকা ভিসার ধরণ ও খরচ
আমেরিকা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য, যেখানে শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা, ভ্রমণ ও স্থায়ী বসবাসের জন্য বিভিন্ন ধরণের ভিসা পাওয়া যায়। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাগুলোকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন- নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা (সাময়িক ভ্রমণের জন্য) এবং ইমিগ্রান্ট ভিসা (স্থায়ী বসবাসের জন্য)।
** নন-ইমিগ্রান্ট ভিসার মধ্যে রয়েছে, পর্যটক বা ভিজিটর ভিসা (B1/B2), স্টুডেন্ট ভিসা (F1), এক্সচেঞ্জ ভিজিটর (J1), ওয়ার্ক ভিসা (H-1B, L-1) এবং ব্যবসায়িক বা বিনিয়োগকারী ভিসা (E-2)।
** ইমিগ্রান্ট ভিসার মধ্যে আছে, পরিবার পুনর্মিলন, গ্রিন কার্ড (DV Lottery), বাগদত্তা ভিসা (K-1) এবং মানবিক আশ্রয় ভিসা।
তবে, প্রতিটি ভিসার জন্য নির্দিষ্ট শর্ত, আবেদন পদ্ধতি ও ফি আলাদা রয়েছে। তাই, আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী সঠিক ভিসা নির্বাচন করলে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, চাকরি বা স্থায়ীভাবে বসবাসের পথ অনেক সহজ হয়ে যায়। নিচে বিভিন্ন সম্পর্কে জেনে নেই-
পর্যটক ও ভিজিটর ভিসা (B1/B2) – খরচ ও আবেদন প্রক্রিয়া
B1/B2 ভিসা হলো যুক্তরাষ্ট্রে স্বল্পমেয়াদে ভ্রমণ, ব্যবসায়িক মিটিং, কনফারেন্সে অংশগ্রহণ, চিকিৎসা গ্রহণ কিংবা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য সবচেয়ে প্রচলিত ভিসা। এখানে B1 ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এবং B2 পর্যটন বা পারিবারিক সফরের জন্য ব্যবহৃত হয়।
আবেদন করার জন্য প্রথমে অনলাইনে DS-160 ফর্ম পূরণ করতে হয়, এরপর ভিসা ফি $185 পরিশোধ করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে সাক্ষাৎকার দিতে হয়। সাক্ষাৎকারে ভ্রমণের উদ্দেশ্য, আর্থিক সামর্থ্য এবং দেশে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রমাণ করতে হয়।
এই ভিসা অনুমোদন পেলে সাধারণত ৬ মাস পর্যন্ত থাকার অনুমতি পাওয়া যায় এবং প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানোও সম্ভব। সহজ আবেদন প্রক্রিয়া এবং তুলনামূলক কম শর্তের কারণে এটি বাংলাদেশিদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় ভিসা।
স্টুডেন্ট ভিসা (F1/M1) – পড়াশোনার জন্য ভিসা তথ্য
F1 এবং M1 ভিসা মূলত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি, এটি যারা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা, ভাষা কোর্স বা পেশাগত প্রশিক্ষণ নিতে চান। F1 ভিসা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ভাষা ইনস্টিটিউটে একাডেমিক পড়াশোনার জন্য ব্যবহৃত হয়, আর M1 ভিসা টেকনিক্যাল বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের জন্য প্রযোজ্য।
এই ভিসা আবেদন করার জন্য প্রথমে একটি স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে I-20 ফর্ম সংগ্রহ করতে হয় এবং আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে হয়। এরপর SEVIS ফি $350 এবং ভিসা ফি $185 পরিশোধ করে দূতাবাসে সাক্ষাৎকার দিতে হয়।
তবে, এই ভিসায় শিক্ষার সময় ছাত্ররা ক্যাম্পাসে পার্ট-টাইম কাজ করতে পারে এবং পড়াশোনা শেষে OPT (Optional Practical Training) এর মাধ্যমে চাকরির সুযোগও পায়। এই ভিসা মার্কিন শিক্ষার মান ও ক্যারিয়ার গঠনের অসাধারণ সুযোগ তৈরি করে।
এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ভিসা (J1) – বিনিময় প্রোগ্রামের সুযোগ
J1 ভিসা শিক্ষা, গবেষণা, প্রশিক্ষণ বা সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ডাক্তার, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য নির্ধারিত। আবেদনকারীদের প্রথমে একটি অনুমোদিত মার্কিন স্পনসর প্রতিষ্ঠান থেকে DS-2019 ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়, যা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র হিসেবে কাজ করে।
এরপর SEVIS ফি $220 এবং ভিসা আবেদন ফি $185 পরিশোধ করে সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে হয়, যেখানে প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা এবং দেশে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি যাচাই করা হয়। J1 ভিসার মেয়াদ সাধারণত প্রোগ্রামের সময়সীমার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
এই ভিসা মূলত আন্তর্জাতিক দক্ষতা অর্জন, পেশাগত নেটওয়ার্ক তৈরি এবং মার্কিন শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এক অসাধারণ সুযোগ প্রদান করে, যা আবেদনকারির ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ওয়ার্ক পারমিট বা কর্মসংস্থান ভিসা (H-1B, L-1, O-1)
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হলো যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবীদের জন্য তৈরি, বিশেষ করে যারা মার্কিন কোম্পানিতে কাজ করতে চান। এর মধ্যে রয়েছে H-1B ভিসা প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা বা অন্যান্য বিশেষজ্ঞ পদের জন্য প্রদান করা হয়,
এখানে L-1 ভিসা বহুজাতিক কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কর্মী স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং O-1 ভিসা বিজ্ঞান, শিল্প, ক্রীড়া বা ব্যবসায় অসাধারণ প্রতিভাধারীদের জন্য নির্ধারিত। আবেদনকারীদের প্রথমে একটি মার্কিন নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার পেতে হয় এবং নিয়োগকর্তা USCIS-এ পিটিশন দাখিল করে।
ভিসা ফি প্রায় $190, তবে অতিরিক্ত প্রসেসিং ফি সাধারণত কোম্পানি বহন করে। ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৩ বছর হয় এবং পরবর্তীতে বাড়ানো যায়। এই ভিসার মাধ্যমে আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যবান কাজের অভিজ্ঞতা, উচ্চ আয় এবং ভবিষ্যতে গ্রিন কার্ড পাওয়ার সুযোগ অর্জন করতে পারেন, যা স্থায়ী বসবাসের পথ উন্মুক্ত করে।
আরো পড়ুনঃ সিঙ্গাপুর কী কী ভিসা পাওয়া যায়?। সিঙ্গাপুর কোন ভিসার খরচ ও বেতন কত?
ব্যবসা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য ভিসা (E-1/E-2)
E-1 এবং E-2 ভিসা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য, মূলত যারা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা পরিচালনা বা বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক। আবেদনকারীর অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তিবদ্ধ দেশের নাগরিক হতে হবে এবং একটি কার্যকর ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে, সাধারণত $100,000 বা তার বেশি।
আবেদন প্রক্রিয়ায় DS-160 ফর্ম পূরণ, বিস্তারিত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জমা এবং দূতাবাসে সাক্ষাৎকার অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন পড়ে। ভিসা ফি প্রায় $205, এবং ব্যবসা চলার সময় ভিসা নবায়নযোগ্য।
আবেদনকারী চাইলে পরিবারও সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায়, এবং সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। এই ভিসা ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ, মার্কিন বাজারে প্রবেশ এবং ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে বসবাসের পথ তৈরি করতে সহায়ক।
ইমিগ্রান্ট ভিসা (Green Card) – স্থায়ী বসবাসের পথ
ইমিগ্রান্ট ভিসা বা গ্রিন কার্ড যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস, কাজ এবং ভবিষ্যতে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ দেয়। এটি বিভিন্ন পথে বা উপায়ে পাওয়া যায়, যেমন পরিবার স্পন্সরশিপ, চাকরি বা ব্যবসায় বিনিয়োগ, এবং কিছু বিশেষ ক্যাটাগরির মাধ্যমে।
আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রথমে USCIS-এর অনুমোদিত পিটিশন পেতে হয়, এরপর অনলাইনে DS-260 ফর্ম পূরণ ও দূতাবাসে সাক্ষাৎকার দিতে হয়। প্রক্রিয়ার খরচ প্রায় $325, এবং মেডিকেল পরীক্ষা ও অন্যান্য নথিপত্রের অতিরিক্ত খরচ থাকতে পারে।
আবেদনকারি ভিসা অনুমোদন পেলে আপনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকতে, কাজ করতে এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এটি নতুন জীবন শুরু করার একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে বিবেচিত।
পরিবার পুনর্মিলন ভিসা – পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার সুযোগ
পরিবার পুনর্মিলন ভিসা মার্কিন নাগরিক বা গ্রিন কার্ডধারীদের জন্য, যারা তাদের স্বামী/ স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা কিংবা ভাইবোনকে যুক্তরাষ্ট্রে আনা চাইেন। আবেদন করতে হলে প্রথমে I-130 পিটিশন জমা দিতে হয়, যা USCIS অনুমোদন করে।
এরপর অনলাইনে DS-260 ফর্ম পূরণ, দূতাবাসে সাক্ষাৎকার এবং মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। আবেদন প্রক্রিয়ার খরচ প্রায় পিটিশন ফি $535 এবং ভিসা প্রসেসিং ফি $325। প্রসেসিং সময় কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
তবে, এই ভিসার মাধ্যমে পরিবার একত্রিত হয়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে পারে, যা প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মানবিকভাবে মূল্যবান সুযোগ হিসেবে বিবেচিত।
fiancé(e) বা বিয়ের জন্য K ভিসা – বিদেশি সঙ্গীকে আনতে
K-1 ভিসা মার্কিন নাগরিকদের বিদেশি বাগদত্তা বা বাগদত্তার জন্য, যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে বিয়ে করতে চান। আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা প্রকৃত সম্পর্কের মধ্যে আছেন এবং গত দুই বছরের মধ্যে অন্তত একবার সাক্ষাৎ করেছেন। I-129F পিটিশন জমা দিয়ে অনুমোদন পেলে DS-160 ফর্ম পূরণ ও সাক্ষাৎকার দিতে হয়।
এই ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর ৯০ দিনের মধ্যে বিয়ে করতে হবে। পিটিশন ফি প্রায় $535 এবং ভিসা আবেদন ফি প্রায় $265। বিয়ের পর স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করা যায়, যা দম্পতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করার পথ তৈরি করে।
ডাইভারসিটি ভিসা (DV Lottery) – লটারির মাধ্যমে স্থায়ী বসবাস
ডাইভারসিটি ভিসা বা DV Lottery প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৫০,০০০ মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়। আবেদন বিনামূল্যে এবং অনলাইনে করতে হয়। এর শর্ত হলো আবেদনকারীকে যোগ্য দেশের নাগরিক হতে হবে এবং ন্যূনতম মাধ্যমিক শিক্ষা থাকতে হবে।
নির্বাচিত হলে DS-260 পূরণ, সাক্ষাৎকার ও মেডিকেল পরীক্ষা করতে হয়। প্রসেসিং ফি প্রায় $330। এই ভিসা সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় পদ্ধতি, কারণ এটি এলোমেলোভাবে নির্বাচিত হয় এবং সরাসরি গ্রিন কার্ড প্রদান করে। তবে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি, তাই যথাযথ তথ্য দিয়ে আবেদন করা গুরুত্বপূর্ণ।
মানবিক ও আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য ভিসা – বিশেষ পরিস্থিতির ভিসা
এই ভিসা রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক বা জাতিগত নিপীড়নের কারণে নিজ দেশে ফিরে যেতে না পারা ব্যক্তিদের জন্য। আবেদনকারীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের এক বছরের মধ্যে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে হয় এবং প্রমাণ করতে হয় যে দেশে ফিরে গেলে তার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে।
এটির আবেদন সাধারণত বিনামূল্যে, তবে আইনি সহায়তা বা নথি প্রস্তুতির অতিরিক্ত খরচ থাকতে পারে। USCIS সাক্ষাৎকার ও যাচাই প্রক্রিয়া শেষে অনুমোদন দিলে আবেদনকারী স্থায়ী বসবাস এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। এটি নিরাপত্তাহীন পরিবেশে থাকা মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করার মানবিক সুযোগ।
ভিসা আবেদন ফি ও অতিরিক্ত খরচের বিস্তারিত তালিকা
ওয়ার্ক ভিসা H-1B, L-1 প্রায় $190, আর O-1 প্রায় $190–$205। ব্যবসা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য E-1/E-2 ভিসার আবেদন ফি প্রায় $205। ইমিগ্রান্ট ভিসা বা গ্রিন কার্ড প্রক্রিয়ার জন্য পিটিশন ফি প্রায় $325, আর মেডিকেল পরীক্ষার খরচ প্রায় $200–$400 পর্যন্ত হতে পারে।
পরিবার পুনর্মিলন ভিসা বা K-ফিয়ান্সে ভিসার জন্য পিটিশন ফি প্রায় $535 এবং ভিসা প্রসেসিং ফি প্রায় $325। এর পাশাপাশি আবেদনকারীরা SEVIS ফি (শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ ভিসার জন্য) পরিশোধ করে, যেমন F1 ভিসার জন্য $350, J1 ভিসার জন্য $220।
কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত Premium Processing Fee ($2,500) দিতে হয়। সব মিলিয়ে, ভিসা আবেদন করার সময় শুধু ফি নয়, মেডিকেল পরীক্ষা, ফটো, নথি অনুবাদ ও যাতায়াত খরচও বিবেচনা করতে হয়।
উপরে উল্লেখিত তালিকা অনুযায়ী সঠিকবাবে প্রস্তুতি নিলে আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও ঝামেলামুক্ত হয়।
শেষকথা - আমেরিকা ভিসার আপডেট তথ্য ২০২৫
আমেরিকায় ভ্রমণ, শিক্ষা, কাজ বা স্থায়ী বসবাস – যেকোনো উদ্দেশ্যের জন্য সঠিক ভিসা নির্বাচনই হলো প্রথম ধাপ। তবে, প্রতিটি ভিসার আলাদা আলাদা নিয়ম, খরচ এবং শর্ত থাকলেও আবেদন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করলে সফলতার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ অস্ট্রিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ – আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা ও খরচ
তাই, আগেভাগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা, সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এবং নির্ভুল তথ্য প্রদান করাই হলো ভিসা পাওয়ার মূল চাবিকাঠি। সঠিক পরিকল্পনা ও তথ্য জানলে যুক্তরাষ্ট্রে আপনার স্বপ্ন পূরণ করা একেবারেই সম্ভব।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url