কুয়েত কী কী ভিসা পাওয়া যায়? - কুয়েত কোন ভিসার খরচ কত?
আরো পড়ুনঃ কাজের ভিসা অস্ট্রেলিয়া ২০২৫ – আবেদন প্রক্রিয়া, খরচ ও চাকরির সুযোগ
২০২৫ সালে কুয়েতে কাজ, ব্যবসা, শিক্ষা কিংবা ভ্রমণের জন্য কোন কোন ধরণের ভিসা পাওয়া যায় এবং প্রতিটি ভিসার খরচ কত – তা জানুন এক জায়গায়।
কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট, ফ্যামিলি ভিসা, ইনভেস্টর, ট্যুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র ও খরচের বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরা হয়েছে। যারা কুয়েতে চাকরি বা স্থায়ীভাবে বসবাসের পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই গাইডটি একদম উপযোগী।
কুয়েত ভিসার ধরণ ও খরচের বিস্তারিত গাইড
বর্তমান সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েত, যা বাংলাদেশের শ্রমবাজার ও কর্মপ্রত্যাশীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক গন্তব্য। তাছাড়া, উন্নত অবকাঠামো, উচ্চ বেতন এবং ট্যাক্স ফ্রি আয় কুয়েতে কাজ করার প্রধান আকর্ষণ।
প্রতিবছর বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায়, হাজার হাজার বাংলাদেশি নাগরিক চাকরি, ব্যবসা, উচ্চশিক্ষা কিংবা পরিবারের সঙ্গে থাকার উদ্দেশ্যে কুয়েতে ভিসার জন্য আবেদন করে থাকেন।
তবে, অনেকেই জানেন না, কুয়েতে ঠিক কী কী ধরণের ভিসা পাওয়া যায়, কোন ভিসার জন্য কী কী যোগ্যতা লাগে, এবং প্রতিটি ভিসার আবেদন খরচ কত সে সম্পর্কে। কারণ, সঠিক তথ্য না জানার কারণে অনেক সময় আবেদনকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন।
এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে জানাবো– কুয়েতের সব জনপ্রিয় ভিসার ধরণ, আবেদন পদ্ধতি, এবং আনুমানিক খরচ সম্পর্কে, যাতে করে আপনি সহজেই আপনার উদ্দেশ্যের জন্য উপযুক্ত ভিসা বেছে নিতে পারেন।
কুয়েত ভিসার ধরনসমূহ – সম্পূর্ণ তালিকা
কুয়েত বিভিন্ন উদ্দেশ্যে আগত বিদেশিদের জন্য একাধিক ধরণের ভিসা প্রদান করে, যা মূলত কাজ, শিক্ষা, ব্যবসা, পরিবার বা ভ্রমণ– এসব উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে ভাগ করা হয়। তবে, সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা (Work Visa), যার মাধ্যমে বিদেশিরা কুয়েতে চাকরি করতে পারেন।
এছাড়া, ফ্যামিলি ভিসা মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকার সুযোগ দেয় এবং ট্যুরিস্ট ভিসা স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়। আবার শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে স্টুডেন্ট ভিসা, আর উদ্যোক্তা বা বিনিয়োগকারীদের জন্য আছে, বিজনেস বা ইনভেস্টর ভিসা।
যারা, স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান, তারা রেসিডেন্স পারমিট এর জন্য আবেদন করতে পারেন। এছাড়া, ট্রানজিট ভিসা, ভিজিট ভিসা এবং ডিপ্লোম্যাটিক ভিসাসহ আরো কিছু বিশেষ ভিসা দেওয়া হয়। তাই, উদ্দেশ্য অনুযায়ী সঠিক ভিসা বেছে নেওয়াই কুয়েতে প্রবেশ ও আইনগতভাবে বসবাসের প্রথম ধাপ।
কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা - শর্ত, খরচ ও আবেদন প্রক্রিয়া
কুয়েত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বিদেশিদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় একটি ভিসা, যার মাধ্যমে তারা কুয়েতে থেকে আইনগতভাবে চাকরি করতে পারেন। তবে, এই ভিসার জন্য প্রথম শর্ত হলো– কুয়েতের কোনো নিবন্ধিত কোম্পানি বা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার লেটার পাওয়া।
কিন্তু, আবেদনকারীর বয়স সাধারণত ২১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পেশায় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র থাকাও প্রয়োজন। এছাড়াও, বৈধ পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিতে হয়।
খরচের ক্ষেত্রে, কুয়েত ওয়ার্ক ভিসার সরকারি ফি সাধারণত ৭০ থেকে ১২০ কুয়েতি দিনার (KWD) এর মধ্যে হয়ে থাকে, যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ২৫,০০০ থেকে ৪৫,০০০ টাকা। এর সঙ্গে মেডিকেল, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন ও ভিসা প্রসেসিং খরচ আলাদা হতে পারে।
আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রথমে নিয়োগকর্তা ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন করে, এরপর বাংলাদেশে কুয়েত দূতাবাসে ভিসা আবেদন জমা দিতে হয়। সেখানে সব নথি যাচাইয়ের পর ভিসা ইস্যু করা হয় এবং অনুমোদন পেলে আপনি কুয়েতে গিয়ে নির্দিষ্ট কোম্পানিতে চাকরি শুরু করতে পারবেন।
কুয়েত ফ্যামিলি বা ডিপেন্ডেন্ট ভিসা পাওয়ার নিয়ম
কুয়েত ফ্যামিলি বা ডিপেন্ডেন্ট ভিসা মূলত সেখানে কর্মরত কোন বিদেশিদের স্ত্রী, সন্তান বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসবাসের সুযোগ দেয়। এই ভিসার জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই কুয়েতে বৈধ ওয়ার্ক পারমিটসহ চাকরিরত হতে হবে এবং নির্দিষ্ট ন্যূনতম বেতনের শর্ত পূরণ করতে হবে (সাধারণত মাসে প্রায় ২৫০ কুয়েতি দিনার বা তার বেশি)।
কিউ এই ভিসা আবেদন করতে চাইলে পাসপোর্ট কপি, সম্পর্কের প্রমাণপত্র (বিবাহ বা জন্ম সনদ), মেডিকেল রিপোর্ট এবং স্পনসরের রেসিডেন্স পারমিট জমা দিতে হয়। নিয়োগকর্তার স্পনসরশিপের ভিত্তিতে আবেদন অনুমোদিত হলে পরিবারের সদস্যরা ভিসা পেয়ে কুয়েতে প্রবেশ ও বসবাস করতে পারেন।
কুয়েত ফ্যামিলি বা ডিপেন্ডট ভিসা সাধারণত এক বছরের জন্য দেওয়া হয় এবং চাকরি ও রেসিডেন্স পারমিট নবায়ন থাকলে এটিও নবায়নযোগ্য।
কুয়েত ট্যুরিস্ট ভিসা কতদিনের জন্য ও খরচ কত?
কুয়েত ট্যুরিস্ট ভিসা হলো মূলত স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণ, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করা বা ব্যবসায়িক মিটিংয়ের মতো অ-চাকরিজনিত কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত এই ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন পর্যন্ত থাকে, তবে, অনেক ক্ষেত্রে এটি ৯০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো যায়।
কেউ আবেদন করতে চাইলে বৈধ পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স, হোটেল বুকিং ও রিটার্ন টিকিটের কপি জমা দিতে হয়। ট্যুরিস্ট ভিসার সরকারি ফি প্রায় ৩ থেকে ৫ কুয়েতি দিনার (KWD), যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ১,০০০ থেকে ১,৮০০ টাকা।
এই ভিসা প্রক্রিয়াটি তুলনামূলক অনেক সহজ এবং অনেক সময় অনলাইনে ই-ভিসার মাধ্যমেও সম্পন্ন করা যায়। তবে, এ ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কুয়েত ত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় জরিমানা বা আইনি জটিলতায় পড়তে হতে পারে।
কুয়েত স্টুডেন্ট ভিসা - বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ
কুয়েত স্টুডেন্ট ভিসা মূলত সেইসকল বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য, যারা কুয়েতের কোন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ কিংবা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা নিতে চান। এই ভিসার জন্য প্রথম শর্ত হলো– কুয়েতের কোনো স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার অফার লেটার পাওয়া।
এরপর বৈধ পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মেডিকেল রিপোর্ট, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ সাধারণত এক বছরের জন্য দেওয়া হয়, তবে পড়াশোনা চলমান থাকলে এটি নবায়নযোগ্য।
খরচের দিক থেকে সরকারি ফি প্রায় ১০ থেকে ২০ কুয়েতি দিনার (KWD), যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৩,৫০০ থেকে ৭,০০০ টাকা। অনেক ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় স্পনসরশিপ বা বৃত্তি (Scholarship) এর সুযোগও দিয়ে থাকে।
এই ভিসার মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পার্ট-টাইম কাজেরও অনুমতি মেলে, যা বিদেশে বাড়তি আয়ের পাশাপাশি ক্যারিয়ার গড়ার পথকে আরও সহজ করে তোলে।
আরো পড়ুনঃ দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা ২০২৫ - ধরণ, খরচ, বেতন ও চাহিদাসম্পন্ন চাকরি
কুয়েত ইনভেস্টর বা বিজনেস ভিসা - ব্যবসায়িক ভিসার সব তথ্য
কুয়েত ইনভেস্টর বা বিজনেস ভিসা মূলত সেইসব বিদেশিদের জন্য, যারা কুয়েতে ব্যবসা শুরু করতে চান, বিদ্যমান কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চান কিংবা ব্যবসায়িক মিটিং ও বাণিজ্যিক কাজের উদ্দেশ্যে সেখানে যেতে চান।
এই ভিসার জন্য আবেদনকারীর বৈধ পাসপোর্ট, ব্যবসায়িক প্রস্তাবনা বা ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান, কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন পেপার, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ ও আমন্ত্রণপত্র জমা দিতে হয়। সাধারণত এই ভিসার মেয়াদ ৩০ দিন থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং প্রয়োজনে নবায়নযোগ্য।
খরচের ক্ষেত্রে সরকারি ফি প্রায় ২০ থেকে ৩০ কুয়েতি দিনার (KWD), যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৭,০০০ থেকে ১০,৫০০ টাকা। সফলভাবে ভিসা পেলে বিনিয়োগকারীরা কুয়েতে নতুন ব্যবসা শুরু করতে বা বাণিজ্যিক পার্টনারশিপ গঠন করতে পারেন।
এই ভিসা কুয়েতে সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ার পাশাপাশি স্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট পাওয়ার পথকেও সহজ করে তোলে।
কুয়েত রেসিডেন্স পারমিট - স্থায়ীভাবে বসবাসের উপায়
কুয়েত রেসিডেন্স পারমিট হলো এমন একটি অনুমতি পত্র, যার মাধ্যমে বিদেশিরা দীর্ঘমেয়াদে কুয়েতে বসবাস ও কাজ করতে পারেন। সাধারণত এটি ওয়ার্ক ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা বা ইনভেস্টর ভিসার মাধ্যমে দেশে প্রবেশের পর ইস্যু করা হয়।
আবেদনকারীকে কুয়েতে বৈধ চাকরি বা আয় উৎস থাকতে হবে এবং নিয়োগকর্তা বা স্পনসরকে রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন জমা দিতে হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে, বৈধ পাসপোর্ট, মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, স্পনসরের অনুমোদনপত্র এবং বাসস্থানের প্রমাণ।
রেসিডেন্স পারমিট ভিসা সাধারণত ১ থেকে ৩ বছর মেয়াদি হয়ে থাকে তবে, মেয়াদ শেষে এটি নবায়নযোগ্য। এ ভিসার খরচ প্রায় ১০ থেকে ২০ কুয়েতি দিনার (KWD) বা জা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৩,৫০০ থেকে ৭,০০০ টাকা।
এই ভিসার মাধ্যমে সেখানে দীর্ঘ সময় আইনগতভাবে বসবাসের পর স্থায়ী রেসিডেন্স বা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সুযোগও তৈরি হয়। এটি কুয়েতে ক্যারিয়ার, ব্যবসা এবং পারিবারিক জীবনের জন্য একটি স্থায়ী ভিত্তি গড়ার পথ খুলে দেয়।
কুয়েত ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও যোগ্যতা
কুয়েতের যে কোনো ভিসার জন্য আবেদন করার আগে কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট ও যোগ্যতা পূরণ করা জরুরি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদসহ), সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম, মেডিকেল রিপোর্ট এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
এছাড়া, কাজের ভিসার জন্য পড়ে চাকরির অফার লেটার, ফ্যামিলি ভিসার জন্য সম্পর্কের প্রমাণপত্র (বিবাহ বা জন্ম সনদ), স্টুডেন্ট ভিসার জন্য ভর্তি চিঠি এবং বিজনেস ভিসার জন্য কোম্পানির আমন্ত্রণপত্র বা ব্যবসায়িক প্রস্তাবনা প্রয়োজন।
যোগ্যতার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স সীমা সাধারণত ২১ থেকে ৫০ বছর এর মধ্যে হতে হয় এবং পেশা অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রমাণ থাকতে হয়। আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণপত্রও অনেক ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক হয়ে থাকে।
উপরে উল্লেখিত সব নথি সঠিকভাবে প্রস্তুত থাকলে এবং শর্ত পূরণ করলে কুয়েত ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়। মূল কথাই হলো সঠিক ডকুমেন্ট জমা দেওয়াই ভিসা অনুমোদনের মূল চাবিকাঠি বিবেচিত হয়।
কুয়েত ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে
কুয়েত ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া জদিও তুলনামূলক অনেক সহজ, তবে সঠিক কিছু ধাপ অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে আবেদনের জন্য ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটি দেওয়া হলো–
** চাকরি/ আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ- কাজ, পড়াশোনা, ব্যবসা অথবা সফরের উদ্দেশ্যে কুয়েতে কোনো প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অফার লেটার বা ইনভাইটেশন লেটার সংগ্রহ করতে হবে।
** প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত- বৈধ পাসপোর্ট, ছবি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মেডিকেল রিপোর্ট, আর্থিক প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট ভিসার জন্য নির্ধারিত সব ডকুমেন্ট প্রস্তুত করতে হবে।
** আবেদন ফর্ম পূরণ- কুয়েত দূতাবাসের ওয়েবসাইট বা অফিস থেকে ভিসা আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
** আবেদন জমা ও ফি প্রদান- সব কাগজপত্রসহ আবেদন ফর্ম দূতাবাসে জমা দিয়ে নির্ধারিত ভিসা ফি প্রদান করতে হবে।
** যাচাই ও অনুমোদন- ভিসা কর্তৃপক্ষ নথি যাচাই শেষে ভিসা অনুমোদন করে। অনুমোদনের পর পাসপোর্টে ভিসা স্টিকার লাগানো হয়।
** ভ্রমণ ও প্রবেশ- ভিসা ইস্যু হলে আপনি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কুয়েতে প্রবেশ করে কাজ, শিক্ষা কিংবা অন্যান্য উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারবেন।
কুয়েত ভিসা ফি ও অতিরিক্ত খরচের বিস্তারিত তালিকা
কুয়েতে ভিসার ফি এবং অন্যান্য খরচ ভিসার ধরন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে প্রধান জনপ্রিয় ভিসার আনুমানিক ফি ও অতিরিক্ত খরচের তালিকা টেবিলের মাধ্যমে দেওয়া হলো–
কুয়েত ভিসা ফি ও অতিরিক্ত খরচের বিস্তারিত তালিকা | ||||
নম্বর | ভিসার ধরন | সরকারি ফি (KWD) | বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক | অতিরিক্ত খরচ |
১ | ওয়ার্ক পারমিট ভিসা | 70 – 120 | 25,000 – 45,000 টাকা | মেডিকেল পরীক্ষা, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন |
২ | ফ্যামিলি/ডিপেন্ডেন্ট ভিসা | 50 – 80 | 18,000 – 30,000 টাকা | মেডিকেল রিপোর্ট, স্পনসর ফি |
৩ | ট্যুরিস্ট ভিসা | 3 – 5 | 1,000 – 1,800 টাকা | ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স, হোটেল বুকিং |
৪ | স্টুডেন্ট ভিসা | 10 – 20 | 3,500 – 7,000 টাকা | ভর্তি ফি, মেডিকেল |
৫ | ইনভেস্টর/বিজনেস ভিসা | 20 – 30 | 7,000 – 10,500 টাকা | আমন্ত্রণপত্র, ব্যবসায়িক নথি |
৬ | রেসিডেন্স পারমিট | 10 – 20 | 3,500 – 7,000 টাকা | মেডিকেল পরীক্ষা, স্পনসরশিপ ফি |
বিঃদ্রঃ- ফি অনেক সময় পরিবর্তন হতে পারে। তবে, মেডিকেল, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং অন্যান্য ডকুমেন্টেশন্নের খরচ আলাদা হয়। তাই, আবেদন করার আগে সর্বশেষ সরকারি ফি ও নথিপত্রের তালিকা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।
শেষকথা- কুয়েতের সকল ভিসার আপডেট তথ্য
কুয়েতে চাকরি, ব্যবসা, শিক্ষা বা ভ্রমণ কিংবা যেকোনো উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য সঠিক ভিসার ধরন জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রতিটি ভিসার শর্ত, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং খরচ আলাদা হয়ে থাকে, তাই আবেদন করার আগে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।
আরো পড়ুনঃ আমেরিকার ডিভি লটারী ২০২৫ – আবেদন প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, সময়সীমা ও ফলাফল
সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকলে কুয়েতের ভিসা পাওয়া কঠিন নয় এবং আপনি সহজেই সেখানে একটি উন্নত জীবন গড়ে তুলতে পারবেন। আশা করি এই গাইডটি আপনাকে আপনার উদ্দেশ্যের জন্য সঠিক ভিসা বেছে নিতে ও আবেদন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url