বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ – ধরণ, আবেদন, বেতন ও বিদেশি শ্রমিক তথ্য
আরো পড়ুনঃ আমেরিকা কাজের ভিসা ২০২৫ - ধরণ, চাহিদা, বেতন ও আবেদন প্রক্রিয়া
২০২৫ সালে বেলজিয়ামে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কীভাবে পাওয়া যায়, ধরণ, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, অধিক চাহিদাসম্পন্ন চাকরি, বেতন কাঠামো, সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ বিস্তারিত গাইড।
হ্যাঁ আমাদের পাঠক পাঠিকাগণ আপনারা যারা বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে বিভিন্ন কাজের যেতে চান, তাদের জন্য এই প্রবন্ধটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই, তাঁরা এটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের পড়ুন।
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ – সম্পন্ন গাইড
বেলজিয়াম বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিদেশি শ্রমিকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় কর্মসংস্থানের দেশ। বিশেষ করে, সেখানে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন পেশাজীবী, ইঞ্জিনিয়ার, আইটি বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, নার্স এবং মৌসুমি শ্রমিকরা কাজের সুযোগ পেতে পারেন।
বিদেশি নাগরিকদের বৈধভাবে কাজ ও বসবাসের জন্য বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রয়োজন, যা সাধারণত “সিঙ্গেল পারমিট” নামে পরিচিত। এটি কাজ ও বসবাসের অনুমতি একসাথে দেয়। যাতে আবেদন প্রক্রিয়ায় নিয়োগকর্তার চুক্তি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অপরাধমুক্ত সনদ এবং আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ আবশ্যক।
২০২৫ সালে বেলজিয়াম সরকার ডিজিটাল সেবাকে আরো বৃদ্ধি ও প্রক্রিয়া দ্রুত করার মাধ্যমে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য আরও সুবিধা তৈরি করেছে। এই ভিসার মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশি কর্মীরা বিভিন্ন খাতে নিরাপদ ও বৈধভাবে কাজ করতে সক্ষম হন।
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কী?
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হলো, এমন একটি বিশেষ অনুমতিপত্র, যার মাধ্যমে নন-ইইউ (Non-EU) নাগরিকরা বেলজিয়ামে থেকে বৈধভাবে কাজ ও বসবাস করতে পারে। এটি মূলত “সিঙ্গেল পারমিট” নামে পরিচিত, যেখানে কাজের অনুমতি ও বসবাসের অনুমতি একইসাথে দেওয়া হয়।
এরজন্য নিয়োগকর্তা সাধারণত কর্মীর পক্ষ থেকে আবেদন করেন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেন। উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন পেশাজীবী, মৌসুমি কর্মী কিংবা সাধারণ চাকরিজীবী, সব ধরনের বিদেশি নাগরিক নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে এই ভিসা পেতে পারেন।
আবেদনকারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অপরাধমুক্ত সার্টিফিকেট, চাকরির চুক্তি ও আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ থাকতে হয়। অনুমোদন পেলে আবেদনকারী D টাইপ লং-স্টে ভিসা নিয়ে বেলজিয়ামে প্রবেশ করে এবং পৌরসভায় নিবন্ধনের মাধ্যমে রেসিডেন্স পারমিট পান।
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ধরণ
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা মূলত বিদেশি নাগরিকদের জন্য বৈধভাবে কাজ ও বসবাসের অনুমতি করে। কাজের ধরণ, দক্ষতা ও সময়সীমার ওপর ভিত্তি করে বেলজিয়ামে কয়েক ধরণের ভিসা রয়েছে। যেমন-
সিঙ্গেল পারমিট (Single Permit)
সবচেয়ে প্রচলিত ধরণ এটি। এতে একইসাথে কাজের অনুমতি ও বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায়। সাধারণ চাকরিজীবী, উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী বা নির্দিষ্ট খাতে কাজের জন্য দেওয়া হয়, যারা বেলজিয়ামে ৯০ দিনের বেশি কাজ করবেন।
সিঙ্গেল পারমিটের শর্ত
- নিয়োগকর্তা কর্মীর পক্ষ থেকে আবেদন করবেন।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- বেলজিয়ান নিয়োগকর্তার সঙ্গে বৈধ চাকরির চুক্তি থাকতে হবে।
- চাকরির খাত অনুযায়ী স্থানীয় শ্রমবাজারে ঘাটতি প্রমাণ করতে হতে পারে।
হাইলি স্কিল্ড ওয়ার্কার পারমিট
এটি মূলত বিশেষজ্ঞ এবং উচ্চ দক্ষ কর্মীদের জন্য। যেমন- ইঞ্জিনিয়ার, আইটি বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার বা গবেষক। এ ধরনের ভিসার জন্য নির্দিষ্ট ন্যূনতম বেতন ও যোগ্যতা প্রয়োজন পড়ে।
হাইলি স্কিল্ড ওয়ার্কার পারমিট শর্ত
- বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বা বিশেষ যোগ্যতা থাকতে হবে।
- ন্যূনতম বার্ষিক বেতন সীমা পূরণ করতে হবে (২০২৫ অনুযায়ী €46,000–€50,000 অঞ্চলভেদে)।
- দীর্ঘমেয়াদি চাকরির প্রমাণপত্র থাকা আবশ্যক।
- স্বাস্থ্যবিমা ও আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ প্রয়োজন।
সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট
কৃষি, বাগান বা হসপিটালিটি খাতে মৌসুমি শ্রমিকদের জন্য সীমিত সময়ের অনুমতি। এটি তদের জন্য প্রজোজ্য যারা কৃষি, ফল চাষ, বাগান ও হসপিটালিটি খাতের মৌসুমি শ্রমিক।
সিজনাল ওয়ার্ক পারমিট শর্ত
- নির্দিষ্ট মৌসুমি সময়ের জন্য (সাধারণত ৯০ দিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত) অনুমতি দেওয়া হয়।
- নিয়োগকর্তার সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি চুক্তি থাকতে হবে।
- মেডিকেল পরীক্ষা ও অপরাধমুক্ত সনদ লাগবে।
- কাজ শেষ হলে দেশে ফিরে আসতে হবে।
বিজনেস বা কোম্পানি ট্রান্সফার পারমিট
এই ভিসাটি তাদের জন্য, যারা আন্তর্জাতিক কোম্পানির কর্মীদের বেলজিয়ামে সাময়িকভাবে কাজের জন্য পাঠানো হলে এ ভিসা লাগে।
বিজনেস বা কোম্পানি ট্রান্সফার পারমিট শর্ত
- একই কোম্পানিতে অন্তত ১ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- বেতন সীমা ও অন্যান্য শর্ত উচ্চ দক্ষ কর্মীদের মতোই প্রযোজ্য।
- নিয়োগপত্রে পদ, বেতন ও মেয়াদ উল্লেখ থাকতে হবে।
- কর্মীকে ম্যানেজার, বিশেষজ্ঞ বা ট্রেইনি হতে হবে।
বেলজিয়ামে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ তথ্য ২০২৫
২০২৫ সালে বেলজিয়াম সরকার সেই দেশে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। Flanders অঞ্চলে বোতলনেক পেশার তালিকা কমিয়ে ২৩ করা হয়েছে। অর্থাৎ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু পেশায় শ্রমিক নিয়োগ করা সহজ হবে।
অন্য ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাকে স্থানীয় শ্রমবাজারে আগে খোঁজ করতে হবে। তবে, উচ্চ দক্ষ কর্মীদের (Highly Skilled Workers) জন্য প্রক্রিয়া অনেক সহজ করা হয়েছে।
** সময়সীমা- মে ২০২৫ থেকে দক্ষ কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে, আর পুরো ভিসা ও রেসিডেন্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে প্রায় ৩ মাসে। ২০২৬ সাল থেকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে সব ধরনের ওয়ার্ক পারমিট সর্বোচ্চ ৪৫ দিনে সম্পন্ন করার।
** বেতন সীমা- অঞ্চলভেদে আলাদা করা হয়েছে, যেমন- Flanders এ উচ্চ দক্ষ কর্মীদের জন্য বার্ষিক ন্যূনতম বেতন প্রায় €48,912, ৩০ বছরের নিচে বা নার্সদের জন্য €39,129। Wallonia ও Brussels অঞ্চলে এই সীমা আরও বেশি। EU Blue Card এর জন্য সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ হয়েছে প্রায় €63,000–66,000।
** ডিজিটাল ব্যবস্থা- এখন থেকে “Working in Belgium” অনলাইন পোর্টালে আবেদন করা যাচ্ছে। এছাড়া ২০২৬ সাল থেকে Single Permit এর জন্য €200 ফি চালু হবে।
সার্বিকভাবে বলা যায়, বেলজিয়াম ২০২৫ সালে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে সময় কমিয়েছে, ডিজিটাল ব্যবস্থা বাড়িয়েছে এবং দক্ষ কর্মীদের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করেছে।
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে প্রথমেই একজন বেলজিয়ান নিয়োগকর্তার সঙ্গে বৈধ চাকরির চুক্তি করতে হয়। সাধারণত নিয়োগকর্তাই কর্মীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের কাছে (Flanders, Wallonia বা Brussels) Single Permit এর জন্য আবেদন জমা দেন।
আবেদন প্রক্রিয়ায় চাকরির চুক্তি, পাসপোর্টের কপি, শিক্ষাগত যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতার সনদ, স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট, অপরাধমুক্ত সনদ এবং নিয়োগকর্তার প্রমাণপত্র প্রয়োজন হয়। অনুমোদন হয়ে গেলে আবেদনকারীকে বেলজিয়ান দূতাবাস থেকে D-টাইপ ভিসা নিতে হয়।
এরপর বেলজিয়ামে পৌঁছে ৮ কার্যদিবসের মধ্যে স্থানীয় পৌরসভায় নিবন্ধন করলে, রেসিডেন্স কার্ড প্রদান করা হয়। উচ্চ দক্ষ কর্মীদের (Highly Skilled Worker) জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়, যেখানে দ্রুত অনুমোদন ও আলাদা বেতন কাঠামো নির্ধারিত থাকে।
সিজনাল বা স্বল্পমেয়াদি কাজের জন্য সীমিত সময়ের ভিসা প্রদান করা হয়। সার্বিকভাবে, বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট পেতে চাকরির অফার, সঠিক ডকুমেন্টেশন এবং আঞ্চলিক অনুমোদন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
আরো পড়ুনঃ ওমান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ – আবেদন প্রক্রিয়া, ধরণ, খরচ ও চাহিদাসম্পন্ন চাকরি
বেলজিয়াম অধিক চাহিদাসম্পন্ন কাজ কী কী?
২০২৫ সালে বেলজিয়ামের শ্রমবাজারে দক্ষ জনবলের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সেখানে স্থানীয় শ্রমিকের ঘাটতি থাকায় বিদেশি কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সেক্টরে ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে-
- আইটি খাত- যেমন সফটওয়্যার ডেভেলপার, সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট, ডেটা অ্যানালিস্ট এবং নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা খুব বেশি।
- স্বাস্থ্যখাতেও রয়েছে উচ্চ চাহিদা যেমন- নার্স, ডাক্তার, কেয়ারগিভার এবং মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের প্রয়োজনীয়তা অব্যাহত রয়েছে।
- ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে যেমন- মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের ভালো সুযোগ রয়েছে।
- নির্মাণশিল্পে দক্ষ রাজমিস্ত্রি, প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান এবং ওয়েল্ডারদের প্রয়োজন বেশি।
- হসপিটালিটি খাতে- হোটেল ম্যানেজার, কুক, ওয়েটার ও হাউসকিপিং স্টাফের চাহিদা দেখা যায়।
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ ২০২৫
২০২৫ সালে বেলজিয়ামে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট (Single Permit) ও D-টাইপ লং-স্টে ভিসা আবেদন করার খরচ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যেমন- Single Permit এর প্রশাসনিক ফি হলো €148, যা আবেদনকারীর পক্ষ থেকে Regional Department of Economic Migration‑এ জমা দিতে হয়।
এছাড়াও, দূতাবাস থেকে D-টাইপ ভিসা নেওয়ার জন্য সাধারণ ফি €180। ফলে মোট সরকারিভিত্তিক খরচ দাঁড়ায় প্রায় €328 হয়। আবার অতিরিক্ত খরচ হতে পারে যেমন-
- Residency Card বা Biometric Card ইস্যুর জন্য €20–€80।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের অনুবাদ, নোটারাইজেশন ও অন্যান্য পরিষেবা ফি।
সারসংক্ষেপ হিসাবে, ২০২৫ সালে বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে প্রায় €328 থেকে €360 খরচ ধরা হয়। এই ফি চুক্তিপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য ডকুমেন্ট ঠিকভাবে জমা দেয়ার শর্তে প্রযোজ্য।
বেলজিয়াম কোন কাজের বেতন কত
নিচে ২০২৫ সালে বেলজিয়ামে বিভিন্ন পেশার গড় বার্ষিক বেতন এবং বাংলাদেশি টাকায় তার সমান পরিমাণ তুলে ধরা হলো। এই হিসাবের জন্য বর্তমান এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে প্রতি ইউরোকে €1 = ৳142.38 এবং প্রতি মার্কিন ডলারকে $1 = ৳121.73 ধরা হয়েছে ।
বেলজিয়ামে বিভিন্ন পেশার গড় বার্ষিক বেতন | |||
নম্বর | পেশা | বার্ষিক বেতন (€) | বাংলাদেশি টাকা |
১ | অর্থনীতিবিদ | ৯৬,১৯৯ | ১৩,৭৫,৯০,০০০ |
২ | শ্রমিক (Entry-level) | ২৮,৮৮৩ | ৪,১০,৯০,০০০ |
৩ | শ্রমিক (Senior) | ৪৫,৭০৯ | ৬,৫০,০০,০০০ |
৪ | সাধারণ কর্মী (Brussels) | ৩,২৮০ | ৪৬,৬০,০০০ |
৫ | গড় বেতন (সর্বমোট) | ৪,০৭৬ | ৫৮,০৭,০০০ |
বিশেষ দ্রষ্টব্য-
- এই বেতনগুলো গড় হিসাব এবং পেশার ধরন, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও অবস্থানভেদে পরিবর্তিত হতে পারে।
- বিভিন্ন খাতে বেতন ভিন্ন হতে পারে, যেমন IT, স্বাস্থ্যসেবা, ইঞ্জিনিয়ারিং, নির্মাণশিল্প ইত্যাদি।
- তাছাড়া পরিবহন ও লজিস্টিক খাতে ট্রাক ড্রাইভার, ওয়্যারহাউস কর্মী ও সাপ্লাই চেইন এক্সপার্টদের জন্য সুযোগ রয়েছে। কৃষি মৌসুমে অস্থায়ী শ্রমিকদেরও প্রয়োজন হয়।
সংক্ষেপে বলা যায় যে, বেলজিয়ামে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন খাতে উজ্জ্বল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বেলজিয়াম যাওয়ার উপায় (সরকারি/বেসরকারি)
বেলজিয়ামে যাওয়ার প্রধান উপায় হলো ভিসা নিয়ে বিমানযোগে যাত্রা করা। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে বেলজিয়াম পৌঁছানো সম্ভব। এছাড়া, বিভিন্ন বেসরকারি ট্যুর অপারেটররা বেলজিয়াম ভ্রমণের প্যাকেজ অফার করে থাকে।
সরকারিভাবে বেলজিয়াম ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
আর দীর্ঘমেয়াদি (National) ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারিকে ভারতে অবস্থিত বেলজিয়াম ভিসা আবেদন কেন্দ্রের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের জন্য বেলজিয়াম সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পরিদর্শন করুন।
বেসরকারিভাবে বেলজিয়াম ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
বিভিন্ন বেসরকারি ট্যুর অপারেটর রয়েছে, যারা বেলজিয়াম ভ্রমণের জন্য প্যাকেজ অফার করে থাকে। এই প্যাকেজগুলোর মধ্যে বিমান টিকেট, হোটেল, স্থানীয় পরিবহন, গাইডসহ অন্যান্য সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকে। আপনি আপনার বাজেট ও প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত প্যাকেজ নির্বাচন করতে পারেন।
তবে, বেলজিয়ামে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা, ফ্লাইট ও অন্যান্য তথ্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনি বেলজিয়ামের সরকারি ওয়েবসাইট বা নির্ভরযোগ্য ট্যুর অপারেটরদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
বেলজিয়াম যেতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
বেলজিয়ামে যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করার সময় কিছু মৌলিক ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র জমা দিতে হয়। মূলত এটি ভ্রমণের ধরন ও সময়সীমার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে, সাধারণ নিচে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট লাগে। যেমন-
- পাসপোর্ট- বৈধ সময়সীমা অন্তত ৬ মাস এবং ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকা আবশ্যক।
- ভিসা আবেদন ফর্ম- পূর্ণাঙ্গভাবে স্বাক্ষরিত এবং সঠিক তথ্যসহ।
- ছবি- সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি (প্রায় ৩.৫ × ৪.৫ সেমি)।
- চাকরির চুক্তি / আমন্ত্রণপত্র- ওয়ার্ক পারমিট বা ব্যবসা/ট্যুরিজমের জন্য প্রযোজ্য।
- আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ- ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা বেতন স্লিপ।
- স্বাস্থ্যবিমা- বেলজিয়ামে থাকা সময়ের জন্য।
- অপরাধমুক্ত সনদ- কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন।
উল্লেখ্ থাকে যে, বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অতিরিক্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়। যেমন- শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট ও নিয়োগকর্তার অনুমোদন দরকার।
বেলজিয়ামে কাজের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ
বেলজিয়াম কাজের সুবিধা
তাছাড়া, বিভিন্ন খাতে যেমন IT, স্বাস্থ্যসেবা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নির্মাণশিল্পে বিদেশিদের চাহিদা বেশি, তাই চাকরির নিরাপত্তা তুলনামূলক ভালো।
বেলজিয়াম কাজের চ্যালেঞ্জ/ অসুবিধা
বেলজিয়ামের কাজের চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, ভাষা (ফ্রেঞ্চ, ডাচ, জার্মান) শিখতে না পারলে যোগাযোগে সমস্যা হতে পারে। উচ্চ জীবনযাত্রার খরচ ও আবাসনের সমস্যা থাকতে পারে। বেলজিয়াম সরকার শ্রমবাজারে স্থানীয় কর্মীকে নিয়োগে প্রাধান্য দেয়।
তাই, বিদেশিদের জন্য কিছু চাকরিতে যোগ্যতার প্রমাণ করা কঠিন হতে পারে। এছাড়া, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ও ডকুমেন্টেশন জটিল হতে পারে। সেকারণে সেখানে সুবিধা অনেক হলেও, কিছু অসুবিধা বা চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
শেষকথা- বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আপডেট তথ্য
২০২৫ সালে বেলজিয়ামে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বিদেশি শ্রমিকদের জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। এটির যেমন, উচ্চ বেতন, সামাজিক সুরক্ষা এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করে। তবে, উচ্চ জীবনযাত্রা, ভাষা সমস্যা ও প্রশাসনিক জটিলতা চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকতে পারে।
আরো পড়ুনঃ জর্ডান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৫ – জর্ডানের চাহিদাসম্পন্ন কাজ ও বেতন
তবেঁ, উপযুক্ত ডকুমেন্টেশন এবং নিয়োগকর্তার সমর্থন থাকলে, বাংলাদেশসহ বিদেশি কর্মীরা সহজে এই ভিসা পেতে পারেন। বড় কথা হলো বেলজিয়ামের শ্রমবাজারে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url