ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স – পলিসি, প্রিমিয়াম, সুবিধা ও ক্লেইম গাইড

আরো পড়ুনঃ ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ ২০২৫ – নির্ভরযোগ্য জীবন বীমা পলিসি ও সুবিধা

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কে জানুন – পলিসির ধরন, প্রিমিয়াম নির্ধারণ, অনলাইন সেবা, ক্লেইম করার নিয়ম এবং অফিস যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য।

হ্যাঁ আমাদের পাঠিক পাঠিকাগণ আজকের আর্টিকেলে আমরা জানব ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে বিস্তারির তথ্য। যা, আপনাকে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের বীমা পলিসি বেছে নিতে সাহায্য করবে। চলুন তাহলে আমরা দেখি-

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স - পলিসি ধরন, প্রিমিয়াম, কভারেজ ও ক্লেইম প্রক্রিয়া

বাংলাদেশে শরীয়াহভিত্তিক জীবন বীমা সেবায় শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারমধ্যে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স অন্যতম। এটি মূলত ইসলামী নীতিমালা মেনে পরিচালিত হয় এবং গ্রাহকের আর্থিক সুরক্ষা, বিনিয়োগের নিরাপত্তা ও সঞ্চয়ের সুযোগ প্রদান করে। 

কোম্পানিটি তার পলিসি হোল্ডারদের জন্য সহজ প্রিমিয়াম পরিশোধ, অনলাইন সেবা এবং দ্রুত ক্লেইম নিষ্পত্তির সুবিধা নিশ্চিত করে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলায় এর বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ও অভিজ্ঞ সেবা প্রদানকারী দলের মাধ্যমে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ হাজারো গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেছে। 

আজকের এই গাইডে আমরা ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পলিসির ধরন, প্রিমিয়াম ও কভারেজ নির্ধারণ, বীমা নেওয়ার ধাপ এবং ক্লেইম প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি -  প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ২০০০ সালের ২৯ মে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০০৫ সালে এটি ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। নিচে এই বীমা কোম্পানীর প্রশাসনিক তথ্য সম্পর্কে দেখুন-

  • সারাদেশে ২৩টি বিভাগীয় অফিস।
  • ১০৩টি সার্ভিস সেন্টার।
  • ২৫২টি জোনাল অফিস।
  • ৬৩৫টি প্রিমিয়াম সংগ্রহ কেন্দ্র।
এই বিস্তৃত নেটওয়ার্ক থাকার কারণে তাঁরা গ্রাহক সেবাকে সহজতর করে এবং তাদের কোম্পানিকে দেশের অন্যতম প্রধান জীবনবীমা কোম্পানী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ কোম্পানির বোর্ড ও পরিচালনা

বিগত ২০২১ সালে দুর্নীতির অভিযোগ এবং হিসাব-অস্বচ্ছতা থাকার কারণে কোম্পানির বোর্ড বিলুপ্ত করা হয় এবং পরবর্তীতে নতুনভাবে ১০ জন স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ করা হয় এবং সেই সিইও এম. হেমায়েত উল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়।

২০২২ সালে শিবলী রুবায়েত‑উদ‑ইসলাম নেতৃত্বাধীন নতুন বোর্ড গঠন করার পর কোম্পানিটি দেশের অন্যতন পরিচিত Beximco গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে আসে। সেই সময় নতুন বোর্ডের মূল লক্ষ্যই ছিল আর্থিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং গ্রাহক ক্ষতিপূরণ কার্যকর করা।

কেন ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স বেছে নেবেন?

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রধান শীর্ষস্থানীয় জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান, যা শরীয়াহভিত্তিক নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালিত হয়। এই কোম্পানি নিরাপদ, স্বচ্ছ এবং গ্রাহকবান্ধব সেবা প্রদানের মাধ্যমে মানুষের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে আসছে। 

প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বীমা পলিসি অফার করে থাকে, যা সঞ্চয়, বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সমন্বয় ঘটায়। ফারিইস্ট ইসলামী লাইফের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, পলিসি হোল্ডারদের জন্য ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী হালাল বিনিয়োগের মাধ্যমে তহবিল পরিচালনা করা। 

এছাড়াও, দ্রুত ক্লেইম নিষ্পত্তি, সহজ প্রিমিয়াম পরিশোধ ব্যবস্থা, অনলাইন সেবা এবং পেশাদার পরামর্শদাতা টিমের উপস্থিতি একে অন্যান্য কোম্পানি থেকে আলাদা করে তুলেছে। তাই যারা নিরাপদ, বিশ্বস্ত এবং শরীয়াহসম্মত জীবন বীমা খুঁজছেন, তাদের জন্য ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সটি একটি সেরা পছন্দ হতে পারে।

বাংলাদেশে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ পলিসি জনপ্রিয় হওয়ার কারণ

বাংলাদেশে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে কয়েকটি প্রধান প্রধান কারণ রয়েছে। নিচে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

** প্রথমত- এটি সরাসরি ইসলামী শরীয়াহ অনুসারে পরিচালিত হওয়ার কারণে, ধর্মীয়ভাবে সচেতন মানুষদের জন্য এটি বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য। 

** দ্বিতীয়ত- কোম্পানিটি গ্রাহকের আর্থিক সামর্থ্য ও প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন কাস্টমাইজড পলিসিগুলো প্রদান করে, যা সবার জন্য সহজলভ্য।

** তৃতীয়ত- এখানে পলিসি থেকে সঞ্চয় এবং সুরক্ষা এই দুই-ই পাওয়া যায়, যা ভবিষ্যতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও, দ্রুত ক্লেইম প্রসেসিং, গ্রাহক সহায়তা কেন্দ্র, দেশের প্রায় সব জেলায় শাখা নেটওয়ার্ক এবং অনলাইন সেবা সুবিধা এই পলিসিকে আরো জনপ্রিয় করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সুনাম, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও গ্রাহক আস্থার কারণে এটি দেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য জীবন বীমা প্রদানকারী হিসেবে পরিচিত।

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম ও কভারেজ কিভাবে নির্ধারিত হয়?

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম এবং কভারেজ নির্ধারণে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা হয়। সাধারণত, প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ভর করে গ্রাহকের বয়স, স্বাস্থ্য অবস্থা, পলিসির মেয়াদ, কভারেজের পরিমাণ এবং বীমার ধরণের ওপর। 

তরুণ গ্রাহকদের জন্য প্রিমিয়াম তুলনামূলকভাবে কম হয়, কারণ তাদের ঝুঁকি কম ধরা হয়। এছাড়া, যদি কেউ উচ্চ কভারেজ নিতে চান, তবে প্রিমিয়ামও বেশি হবে। কোম্পানি গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী এককালীন, মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বাৎসরিক প্রিমিয়াম প্রদানের সুযোগ দেয়। 

কভারেজের ক্ষেত্রে মৃত্যু, দুর্ঘটনা, স্থায়ী অক্ষমতা বা নির্দিষ্ট রোগের সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সবকিছু চূড়ান্ত করার আগে কোম্পানি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কাগজপত্র যাচাই করে। এরফলে গ্রাহক সঠিক প্রিমিয়াম ও কভারেজ সুবিধা পান।

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রিমিয়াম পরিশোধ ও অনলাইন সেবা সুবিধা

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স গ্রাহকদের জন্য প্রিমিয়াম পরিশোধ প্রক্রিয়াকে আরো সহজ ও আধুনিক করেছে। তাই, গ্রাহক চাইলে নগদ, ব্যাংক ট্রান্সফার, মোবাইল ব্যাংকিং (bKash, Nagad, Rocket ইত্যাদি) বা অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে প্রিমিয়াম জমা দিতে পারেন। 

এর ফলে গ্রাহকেরা ব্যাংকে না গিয়ে বাড়িতে বসেই প্রিমিয়াম পরিশোধ করা সম্ভব হয়। এছাড়াও, কোম্পানির ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ থেকে গ্রাহক পলিসি সংক্রান্ত তথ্য দেখা, পেমেন্ট ইতিহাস চেক করা এবং নতুন পলিসির জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। 

পলিসি হোল্ডারেরা অনলাইন সেবা ব্যবহারের মাধ্যমে সহজে আপডেট থাকতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দ্রুত পেতে পারেন। আর এই ডিজিটাল সুবিধা গ্রাহকদের সময় ও খরচ বাঁচায়, পাশাপাশি বীমা সেবাকে আরো আধুনিক ও সহজলভ্য করে তুলেছে।

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ বীমা নেওয়ার ধাপ – স্টেপ বাই স্টেপ গাইড

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে বীমা নিতে চাইলে আপনাকে কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে ধাপগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-

পড়ুনঃ ২০২৫ সালে বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানি – জীবন ও সাধারণ বীমায় নির্ভরযোগ্য নাম

  • প্রয়োজন নির্ধারণ– প্রথমে গ্রাহককে নিজের আর্থিক প্রয়োজন ও লক্ষ্য ঠিক করতে হবে।
  • পলিসি নির্বাচন– কোম্পানির দেওয়া বিভিন্ন পলিসি থেকে উপযুক্তটি বেছে নিতে হবে।
  • আবেদনপত্র পূরণ– নির্ধারিত ফর্মে ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য পূরণ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা– জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি, আয় প্রমাণপত্র, স্বাস্থ্য রিপোর্ট ইত্যাদি দিতে হবে।
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষা (প্রয়োজনে)– কিছু পলিসির ক্ষেত্রে মেডিক্যাল চেকআপ লাগতে পারে।
  • প্রিমিয়াম পরিশোধ – প্রথম প্রিমিয়াম জমা দিয়ে পলিসি অ্যাক্টিভ করতে হবে।
  • পলিসি রিসিভ – সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহক বীমা ডকুমেন্ট পাবেন।
উপরে উল্লেখিত সহজ ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনার সহজেই বীমা নেওয়া সম্ভব হবে।

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ক্লেইম করার নিয়ম

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ক্লেইম করার প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও সুসংগঠিত। যেমন- প্রথমে পলিসি হোল্ডারের মৃত্বজেমন-কিংবা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তি (Nominee) কোম্পানিকে লিখিতভাবে অবিহীত করতে হবে। 

এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন- পলিসি ডকুমেন্ট, মৃত্যু সনদ, মেডিক্যাল রিপোর্ট, পুলিশ রিপোর্ট (যদি দুর্ঘটনা হয়) এবং মনোনীত ব্যক্তির পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে। কোম্পানি কাগজপত্র যাচাই- বাচাই করে ও প্রয়োজনে তদন্তের ব্যবস্থা করে। 

তবে, সবকিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্লেইমের অর্থ গ্রাহকের বা মনোনীত ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। ক্লেইম প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে সঠিক তথ্য প্রদান ও কাগজপত্র সম্পূর্ণ জমা দেওয়া জরুরি। এ কারণে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ গ্রাহকদের কাছে বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত।

গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও রিভিউ – ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স

গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স একটি বিশ্বস্ত ও পেশাদার বীমা কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া, অনেক গ্রাহকেই জানান, তাদের প্রিমিয়াম পরিশোধ ব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ, এবং অনলাইন সেবা ব্যবস্থা সুবিধাজনক। 

পলিসির কভারেজ ও শর্তাগুলো সু-স্পষ্টভাবে জানানো হয়, ফলে গ্রাহকের বিভ্রান্তি কম হয়। বিশেষ করে ক্লেইম প্রক্রিয়ার গতি ও স্বচ্ছতা গ্রাহকদের আরো আস্থা অর্জন করেছে। কারণ, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শাখা থাকার কারণে গ্রাহকরা সহজে সেবা পান। 

তবে, কিছু কিছু গ্রাহক অনেক সময়ে ফলো-আপ সেবার উন্নতি চেয়েছেন।  সামগ্রিকভাবে, এর ইতিবাচক রিভিউ অনেক বেশি, যা প্রতিষ্ঠানটির প্রতি মানুষের আস্থা ও জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে। ধারাবাহিক সেবা উন্নয়নের মাধ্যমে এই আস্থা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ অফিস ঠিকানা ও যোগাযোগের মাধ্যম

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত। নিচে এটি বিস্তারিত ঠিকানা আপনাদের সুবিধার জন্য তুলে ধরা হল-

  • Far East Islami Life Insurance Co. Ltd.,
  • Head Office, 90, Motijheel Commercial Area, 
  • Dhaka-1000, Bangladesh। 
  • যোগাযোগের জন্য ফোন- +880-2-9550061-4, ফ্যাক্স- +880-2-9553567
  • অফিসিয়াল ওয়েবসাইট- www.fareastislamilife.com। 

এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তাদের শাখা অফিস রয়েছে। যেখানে গ্রাহকেরা চাইলে সরাসরি গিয়ে সেবা নিতে পারেন। আবার গ্রাহকরা ইমেইল, ফোন, অনলাইন কন্টাক্ট ফর্ম কিংবা সরাসরি অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। 

তছাড়াও, অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও হেল্পলাইন নম্বরের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য পাওয়া যায়। এসব মাধ্যম গ্রাহকদের জন্য দ্রুত ও সহজ যোগাযোগ নিশ্চিত করে।

ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ আর্থিক অবস্থা ও দাবিপূরণ

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কাজ করে আসছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত তাঁদের মোট অমীমাংসিত ক্লেইম ছিল প্রায় ২,৯৭৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ৫৮.৩৫ কোটি টাকা (~২%) নিষ্পত্তি হয়েছে। দাবিপূরণের জন্য নেওয়া পদক্ষেপ সূমহ- 

  • অফিস একীভবন ও চালানো গাড়ি বিক্রি।
  • তাঁদের গুলশান, কাকরাইল ও ফেনিতে অবস্থিত জমি বিক্রি।
  • কর্মী ছাঁটাই ও কমিশন নিয়ন্ত্রণফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পণ্য ও দের।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির বিভিন্ন বীমা পলিসি

বর্তমান ২০২৫ সালে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে, বেশ কয়েক ধরণের চালু রয়েছে। নিচে এর প্রধান ও জনপ্রিয় কয়েকটি বীমা পলিসি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

একক জীবনবীমা

একক বা ব্যক্তিগত জীবনবীমা পরিকল্পনা হলো এমন একটি আর্থিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, যা মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তিকে নির্ধারিত অর্থ প্রদান করে। এটি পরিবারের আর্থিক স্থিতি বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা মোকাবিলা করতে সহায়ক হয়।

গ্রুপ জীবনবীমা

বিভিন্ন সংস্থা অথবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের জন্য জীবনবীমা একটি গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স সুবিধা, যেখানে সব কর্মী একসাথে বীমার আওতায় আসে। এতে করে দুর্ঘটনা, মৃত্যু বা অক্ষমতার ক্ষেত্রে আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত হয় এবং কর্মীদের জন্য অতিরিক্ত কল্যাণমূলক সুবিধা প্রদান করা হয়।

পেনশন প্ল্যান

অবসরকালীন আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অপরিহার্য। তাই, নিয়মিত সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও জীবন বীমা গ্রহণের মাধ্যমে অবসরোত্তর জীবনে স্থিতিশীল আয় ও আর্থিক স্বাধীনতা বজায় রাখা যায়, যা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা মোকাবেলায় সহায়তা করে।

চাইল্ড প্রোটেকশন প্ল্যান

সন্তানদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষভাবে পরিবারের জন্য এটি তৈরি বীমা পরিকল্পনা সঞ্চয় ও সুরক্ষার সমন্বয় ঘটায়, যা অভিভাবকদের নিশ্চিন্তে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অনেক সহায়তা করে।

মাসিক সঞ্চয় (Monthly Savings Plan – MSP)

নিয়মিত ছোট ছোট সঞ্চয়ের মাধ্যমে ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। তবে, এর সব বীমা পণ্য ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী পরিচালিত হয়, যা হালাল বিনিয়োগ ও নীতিনিষ্ঠ আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ ও বিশ্বস্ত সেবা প্রদান করে।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির নিয়ন্ত্রক সংস্থা

বাংলাদেশে জীবনবীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলো মূলত Insurance Development and Regulatory Authority (IDRA)। এটি সাধারণত বীমা কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করে, যাতে তারা আইন ও নীতিমালা মেনে চলে। 

IDRA মূলত গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা, আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত এবং প্রতারণা প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটি বীমা শিল্পের উন্নয়ন, পলিসির মানোন্নয়ন এবং বিনিয়োগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেয়। এর ফলে গ্রাহকরা আরও বিশ্বস্ত ও সুরক্ষিত জীবনবীমা সেবা পেয়ে থাকে।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির সুবিধা ও অসুবিধা

সবকিছুর সুবিধা ও অসুবিধা এই দুটোই বিদ্যামান থাকে। সেক্ষেত্রে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে, পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়ছে। নিচে টেবিলের মাধ্যমে এটি প্রধান প্রধান সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরা হল-

ফারইস্ট ইসলামী লাইফের সুবিধা  অসুবিধা

নং

সুবিধা

অসুবিধা

ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক জীবনবীমা

দাবিপূরণে দীর্ঘমেয়াদি বিলম্ব

সারাদেশে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক

অতীতে পরিচালনাগত দুর্নীতি

বৈচিত্র্যময় পণ্য

গ্রাহকের আস্থা পুনঃস্থাপনে সময়ের প্রয়োজন

IDRA নিয়ন্ত্রিত

 

শেষকথা – কেন ফারইস্ট লাইফ আপনার জন্য সেরা পছন্দ?

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশের জীবনবীমা খাতে একটি শক্তিশালী নাম। যদিও, অতীতে আর্থিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, কিন্তু নতুন বোর্ড ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতা অর্জন করছে।

আরো পড়ুনঃ মেটলাইফ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ ২০২৫ – সেরা জীবন বীমা পলিসি ও সুবিধা

পাঠক পাঠিকাগণ আমরা আশাকরি আমনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পেরেছি, ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পলিসি ধরন, প্রিমিয়াম, কভারেজ, ক্লেইম প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আশাবাদী, ধন্যবাদ।

মূল বার্তা- ইসলামী ভিত্তিক পণ্য, বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, বৈচিত্র্যময় সেবা এবং নতুন বোর্ডের নেতৃত্ব কোম্পানিকে গ্রাহক বিশ্বাস পুনঃস্থাপনে সহায়তা করছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url