ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা  সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা অনেকেই এই ব্যাপারে জানতে চাই। আজকের এই আর্টিকেল পড়ে জানতে পারবেন ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। চলুন তাহলে দেরি না করে ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা এ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

ত্রিফলার উপকারিতা ব্যাপক। তবে উপকারিতার সাথে সাথে ত্রিফলার কিছু অপকারিতাও আছে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

পেজ সূচিপত্রঃ ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা

ভূমিকা

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়টি হল ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। ত্রিফলা মূলত তিনটি ফলের সংমিশ্রণে তৈরি। ত্রিফলার মধ্যে আছে আমলকি, হরিতকি ও বহেরা। এই তিন ফলের সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে ত্রিফলা। তিনটি ফলেরই বিশেষ বিশেষ গুন আছে। আর এ গুণগুলোকে একত্রে করে বানানো হয়েছে ত্রিফলা। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

ত্রিফলার মধ্যে এমন গুন আছে যেগুলো আর অন্য কোন ফলে নেই। অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি শরীরে নানা সমস্যায় জাদুর মত কাজ করে। আয়ুর্বেদ মতে, প্রতিটি ফলের মধ্যে আলাদা আলাদা পুষ্টিগুণ। করোনা প্রকোপ কমাতে দরকার  প্রতিরোধ ক্ষমতা, আর সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে ত্রিফলার জুড়ি মেলা ভার। আর্টিকেলটি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়েন তাহলে ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।

ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা ব্যাপক। চলুন তাহলে ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে নিয়মিত ত্রিফলা সেবন করলে তা ওজন কমাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ১৬ থেকে ৬০ বছর বয়সী স্থলকাই কিছু বাছাই করা লোকজনদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করে তাদের উপর পরীক্ষা করা হয়েছিল ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ত্রিফলার উপকারিতা। বস্তুত আয়ুর্বেদে বলা হয় যে ত্রিফলা আমাদের মায়ের মত যত্ন করে থাকে। চোখের ছানি ও গ্লকোমা নিয়ন্ত্রণে ত্রিফলা আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ তৈরিতে কাজে লাগে।

ক্লিনিক্যাল গবেষণা প্রমাণ করে ছানি বিরোধী ও দৃষ্টিশক্তির উন্নতি সাধনে এই ভেষজ উপকারিতা। ত্রিফলা চুলের সুরক্ষাকারী গুণাবলীর জন্য পরিচিত সাধারণ অকালে চুল পাকা রোধ করতে সাহায্য করে। কার্যকলাপের জন্য ত্রিফলা ব্যবহৃত হয়ে থাকে মাড়ির সমস্যা ও অন্যান্য মৌখিক সমস্যার বিরুদ্ধে। ইনসুলিন হরমোন এর উপর ক্রিয়ার ফলে ত্রিফলা যে ডায়াবেটিস বিরোধী তা আজ প্রমাণিত সত্য। এটি রক্ত স্রোতে গ্লকোজ জমা হওয়া বা বিমুক্ত হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
ত্রিফলা হলে একটি প্রাকৃতিক জোলাপ। এটি স্বল্প পরিমাণে সেবন করা যেমন উপকারী, অপরিমিত পরিমাণে সেবন করলে তা ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রির আকার ধারণ করে। যদি আপনি নির্ধারিত ওষুধ সেবন করে থাকেন, তাহলে ত্রিফলা খাদ্যাভাসে যোগ করার আগে আপনার আয়ুর্বেদের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া বাঞ্ছনীয় কারণ ত্রিফলা অন্যান্য ওষুধের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে। বাচ্চাদের ত্রিফলা দেওয়া উচিত নয়।

ত্রিফলা উপকারিতা

ত্রিফলা রয়েছে সর্বাধিক স্বাস্থ্যগুন যা শারীরিক সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্রিফলাই  রয়েছে তিনটি ফল। আমলকি, বহেরা এবং হরিতকি। এই তিনটি ফলের ভিন্ন ভিন্ন গুণ রয়েছে। হাজারো গুন সম্পন্ন ত্রিফলা একটি ভেষজ ওষুধ, যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,  অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান। ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেই ত্রিফলা উপকারিতা সম্পর্কে।

ত্রিফলার উপকারিতা:
  1. ত্রিফলা পেটের সমস্যা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ত্রিফলা গুড়ো পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে নানা সমস্যা দূর হয়।
  2. এক গবেষণায় ত্রিফলার উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত ত্রিফলা চূর্ণ পানিতে ভিজিয়ে খেলে শরীরে ক্যান্সার সেল জন্মানোর সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
  3. চোখের সু-স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে ত্রিফলার উপকারিতা অতুলনীয়। নিয়মিত ত্রিফলা খেলে চোখের ইনফেকশন দূর হয়। চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখে অস্বস্তি ভাব ইত্যাদি দূর করতে ত্রিফলা বেশ কার্যকর।
  4. ত্রিফলা ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করে ইনসুলিনের উপর কাজ করে। নিয়মিত ত্রিফলা খাওয়ার ফলে রক্তে গ্লকোজ জমা হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
  5. ত্রিফলা হজম প্রক্রিয়ার সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্রিফলা রেচন প্রক্রিয়ার গতিপথ উন্নত করে।

ত্রিফলার জলের উপকারিতা

ত্রিফলার জল খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার। সকাল সন্ধ্যা জলের সঙ্গে শিলা লবন ও চিনি মিশিয়ে ত্রিফলা খেতে পারেন। ত্রিফলা খালি পেটে খেতে হবে। এটি আরো স্বাস্থ্য উপকার করে বা আপনি খাবারের আধা ঘন্টা আগে বা খাবার আধা ঘন্টা পরে তিনি ফল খেতে পারেন।
আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের ক্রমবর্ধমান মাত্রায় অস্থির থাকেন, তাহলে প্রতিদিন রাতে শোবার সময় ত্রিফলার জল খেয়ে ঘুমাতে পারেন। এতে করে আপনি অনেক উপকার পাবেন। আশা করি তাহলে বুঝতে পেরেছেন ত্রিফলার জল আমাদের কিভাবে উপকারে আসে।

ত্রিফলা খাওয়ার নিয়ম

ত্রিফলা আমাদের শরীরের জন্য অনেক জরুরী। তিনটি ফলের সংমিশ্রণে বানানো হয়েছে ত্রিফলা। অনেক উপকারিতা রয়েছে। ত্রিফলা অনেকভাবে খাওয়া যায়। তবে ত্রিফলা খাওয়ার বিশেষ কিছু নিয়ম 
রয়েছে। ওপরে ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনা করা হয়েছে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ত্রিফলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

ত্রিফলা খাওয়ার নিয়ম:
  1. লেবুর সাথে আপনারা ত্রিফলা খেতে পারেন। আপনি যদি এরশাদ পছন্দ না করেন তবে আপনি এটি রস তৈরি করে পান করতে পারেন। ত্রিফলা রসের উপকারিতা গুঁড়ার মতই। ত্রিফলা রস তৈরি করতে জলে ত্রিফলার গুঁড়ো, কিছু মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। মনে রাখবেন, যে উপাদানগুলি হালকাভাবে ব্যবহার করুন, যাতে ত্রিফলার সবকিছুটা পরিবর্তন হয়।
  2. ত্রিফলা গুঁড়ো চায়ের আকারে ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্রিফলা গুঁড়ো জলে সিদ্ধ করে তাতে মধু যোগ করুন। এটি সকালে এবং সন্ধ্যায় নিয়মিত চায়ের পরিবর্তে খাওয়া যেতে পারে।
  3. আপনি যদি ত্রিফলা চূর্ণের স্বাদ পছন্দ না করেন তবে এটি ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল আকারেও নেয়া যেতে পারে। এটি বাজারে সহজেই পাওয়া যায়।
  4. ত্রিফলা পাউডার দিয়েও চোখ ধুতে পারেন। হালকা গরম জলে এক থেকে দুই চামচ ত্রিফলা গুঁড়ো দিয়ে সারারাত রেখে দিন এবং সকালে ছাঁকুন। তারপরে মিশ্রণ জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
  5. ত্রিফলা পাউডার ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বককে উজ্জ্বল ও দাগ হীন করতে এটি ফেসমাস্ক এবং প্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

চুলের যত্নে ত্রিফলার ব্যবহার

চুল আমাদের ব্যক্তিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা সবাই চাই যে আমাদের লম্বা, শক্ত, ঘন এবং চকচকে চুল হোক। কিন্তু বর্তমানে দৌড়ঝাপময় জীবনে বেশিরভাগ মানুষই তাদের ব্যস্ততা ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে চুলের নানান সমস্যার সম্মুখীন হন। আজকাল খুশকি, চুল পড়া, চুল আকালে পেকে যাওয়া পাশাপাশি দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত চুলের সমস্যা খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে।
ত্রিফলার ব্যবহার চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি খুবই কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। ত্রিফলা একটি সংস্কৃত শব্দ যার অর্থ তিনটি ফলের সমন্বয়। বিশেষজ্ঞদের মতে চুল পড়া, খুশকি, অকালে পেকে যাওয়া ইত্যাদির মতো চুলের প্রতিটি সমস্যার জন্য ত্রিফলা সর্বোত্তম সমাধান। কালো চুলের জন্য ত্রিফলা ব্যবহার করা হয়। আশা করি তাহলে বুঝতে পেরেছেন চুলের যত্নে ত্রিফলা কিভাবে উপকার করে।

ত্রিফলা তৈরির নিয়ম

ত্রিফলা হল তিনটি ফলের সমন্বয় আমলকি, হরিতকি ও বহেরা। ত্রিফলা তৈরি করা নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হবে।
  1. ১ কেজি আমলকি 
  2. ১ কেজি হরিতকি
  3. ১ কেজি বহেরা
উপকরণের উপরে বর্ণিত ফলগুলি ধুয়ে নিন। পরে ফলগুলো ছেঁচে ছেঁচে কুঁচি করে নিন। এরপর ফলগুলি একটি মোটা বাটি বা পাত্রে ঢেলে নিন। এরপর এক গোজা কাপড় লেপ করে এর উপরে ঢেকে রাখুন। তিন দিনের মধ্যে আপনার ত্রিফলা তৈরি হবে। তিনদিন পরে, পাত্র থেকে ফলগুলি ছেচে ছেচে নিস্তেজ করুন। এরপর ফলগুলি সরিয়ে ফেলে দিন এবং ত্রিফলা বানিয়ে ফেলুন। আর ত্রিফলের মাধ্যমে আপনারা তখন ওষুধ বানাতে পারেন।

আশা করি তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন ত্রিফলা খাওয়ার উপকারিতা - ত্রিফলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এরকম সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট অর্ডিনারি আইটি ভিজিট করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ২৪১৪২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url